সম্পর্কের প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনায় মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবনের এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সমস্ত ছুতমার্গ, সামাজিক চাপ, যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই ‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই, আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।মনোবিদের কাছে এক জন প্রশ্ন রেখেছিলেন, এমনিতে বলা হয় কোনও কিছুতেই প্রত্যাশা রাখা উচিত নয়। কিন্তু কাছের মানুষের থেকে ছোটখাটো বিষয়ে প্রত্যাশা চলেই আসে। একেবারে প্রত্যাশাহীন সম্পর্ক কি সম্ভব?
প্রত্যাশা এমন একটি বিষয়, যার আসার কোনও পূর্ব ইঙ্গিত থাকে না। পুরোটাই নির্ভর করে সম্পর্কের সমীকরণের উপরে। ব্যক্তিভেদে বদলেও যায় প্রত্যাশার সংজ্ঞা। ভালবাসার বিনিময়ে ভালবাসা, আবেগের বিনিময়ে আবেগ, এও তো এক ধরনের প্রত্যাশা। এটুকু চাওয়া তো স্বাভাবিক। কিন্তু প্রত্যাশার জাল কতদূর বিস্তৃত তার উপর নির্ভর করে ভুল-ঠিক। এ প্রসঙ্গে মনোবিদ বলেন, ‘‘না, প্রত্যাশা করা অনুচিত নয়। কিন্তু প্রত্যাশার সঙ্গে যেটা চলে আসে, তা হল অবসাদ। কারণ আমরা ঠিক যে ভাবে চাইছি সব সময় সব কিছু একই রকম ভাবে হয় না। ফলে হতাশ হওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। সেখান থেকে আসলে আমরা নিজেদের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় আসি। যে আশা করে যখন কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না, তখন প্রত্যাশাই রাখব না। কিন্তু তা-ও সবটা যায় না। শুধু আমাদের ভেবে দেখা জরুরি, কারও কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করছি, সেটা আসলে কতটা বাস্তবসম্মত। কাছের মানুষের সামর্থ্য কতটুকু, তার একটা ধারণা আমাদের কাছে থাকে। ফলে আমরা যদি সেইটুকু বুঝে প্রত্যাশা করি, তা হলে আর বার বার হতাশ হতে হয় না।’’