—প্রতীকী চিত্র।
কাঁচা আনাজ? নাকি সিদ্ধ, রান্না করে নেওয়া শাকসবজি? কোনটা খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যসম্মত? যেখানে উচ্চ তাপমাত্রা বা জলে দ্রাব্য ভিটামিন রান্নার পরে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, সেখানে পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রেখে কী ভাবে রাঁধা যায় তরিতরকারি? কাঁচা আনাজ খাওয়ায় কি উপকারের চেয়ে অপকার বেশি?
স্বাস্থ্যকর খেতে গিয়ে অনেকেই কাঁচা আনাজ দিয়ে স্যালাড বানিয়ে খেয়ে থাকেন। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট হিনা নাফিস বললেন, আনাজ রান্না করে খাবেন নাকি কাঁচা, সেটা নির্ভর করে কী ধরনের আনাজ খাচ্ছেন, তার উপরে। ‘‘যত সবুজ পাতাযুক্ত আনাজ রয়েছে, তা বেশি রান্না করলে গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন পালং, লেটুস ইত্যাদি। আবার গাজর, বিট জাতীয় আনাজ যদি ভাল করে সিদ্ধ না করে খান, তার পুষ্টিগুণের আত্তীকরণই হবে না শরীরে। কাঁচা আনাজে ফাইবার ইনটেক বেশি হওয়ার মতো উপকারিতা থাকলেও তা হজম করতেও বেগ পেতে হয়। তাই কিছু আনাজ রান্না করে খাওয়াই ভাল।’’
আনাজ কী ভাবে ধোয়া, কাটা ও রান্না করা হচ্ছে, তার উপরে গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ থাকার বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করে। বাজার থেকে আনাজপাতি কিনে আনার পরে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে, ভাল করে ধুয়ে ডুমো ডুমো করে কেটে প্রেশার কুকারে যদি রান্না করে ফেলা যায়, গুণ বজায় থাকবে সবচেয়ে বেশি। আনাজ সিদ্ধ করার জল পরে রান্নায় ব্যবহার করে ফেলতে হবে।
পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বললেন, ‘‘আনাজ কাটার পরে জলে ধুলে বা ভিজিয়ে রাখলে, কেটে বেশিক্ষণ রেখে দিলে কিংবা খুব ছোট টুকরো করে কাটলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। খুব বেশি আঁচে অনেকক্ষণ ধরে রাঁধলেও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। বারবার চাল ধুলে যেমন ভিটামিন বি নষ্ট হয়।’’ আনাজ সিদ্ধ করে বা সতে করে খাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।
বাজার থেকে কেনাই হোক বা ফ্রোজ়েন, আনাজপাতিতে থাকা কীটনাশক, মাইক্রোঅর্গ্যানিজ়ম কিংবা ওয়ার্মের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। খোসা পাতলা আনাজের ক্ষেত্রে এটা বেশি খেয়াল রাখা দরকার। হিনার কথায়, ‘‘অনেকেই লাউয়ের জুস বানিয়ে খান। সে ক্ষেত্রে ভিতরে পোকা থেকে গেলে তা বেছে বাদ দেওয়ার সুযোগ থাকে না।’’
আনাজের ধরন অনুযায়ী স্থির করুন তা কাঁচা খাবেন না রান্না করে। খাবারে পুষ্টিগুণ বজায় রাখাই কিন্তু আসল উদ্দেশ্য।