বাড়ি হোক পরিবেশবান্ধব। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ষায় প্রকৃতির সজীবতা যদি বাড়িতেও প্রতিফলিত হয়, তবে কেমন হবে? বিশ্ব উষ্ণায়ন, দূষণের জেরে বিশ্ব জুড়েই আবহাওয়ায় বদল আসছে। প্রতি মুহূর্তে গাছ লাগানো, পরিবেশবান্ধব জিনিস ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে দুনিয়া। যথেচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও চলছে। কী ভাবছেন? সবই তো জানেন করণীয় কী? আপনি কিন্তু নিজের বাড়িকেই করে তুলতে পারেন পরিবেশবান্ধব। ঘর থেকে বারান্দা— সবুজের ছোঁয়ায় প্রাণ পাবে আপনার স্বপ্নের ঘর।
সবুজের ছোঁয়া
ঘর, বারান্দা, শৌচাগার সর্বত্রই সবুজের ছোঁয়া প্রাণ এনে দিতে পারে। এমন অনেক গাছ আছে যেগুলি জলেই বৃদ্ধি পায়, যেমন পিস লিলি, লাকি ব্যাম্বু, স্পাইডার প্ল্যান্ট। আবার কিছু গাছ আছে যেগুলির জন্য বিশেষ পরিচর্যার দরকার হয় না, ঘর সাজানোর জন্য ব্যবহার করা যায়। জেড প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট, স্পাইডার প্ল্যান্ট দিয়ে টেবিল থেকে ঘরের কোণ দিব্যি সাজিয়ে তুলতে পারেন। এতে ঘরের পরিবেশও ভাল থাকবে, বাড়ি হয়ে উঠবে পরিবেশবান্ধব। আর যদি বাড়ির সঙ্গে একফালি বারান্দা থাকে, সেখানে ফলাতে পারেন ধনেপাতা, কাঁচালঙ্কা, কারিপাতা-সহ রকমারি ফুলের গাছ।
বড় বড় জানলা-দরজা
এখনকার দিনে বহু বাড়িতেই জিনিসপত্র রাখার সুবিধার জন্য দেওয়ালের পরিমাণ বাড়াতে জানালা ছোট করে দেওয়া হয়। অনেক বাড়িতেই বড় জানালা থাকলেও, খোলা-বন্ধ করার লোকের অভাবে বহু জানালা বন্ধই পড়ে থাকে। যার ফলে অনেক সময় দিনের বেলাতেও বৈদ্যুতিক আলো ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ কী ভাবে আসে? কয়লা বা অন্য জৈব জ্বালানি থেকে তাপ উৎপাদনের ফলে, এক দিকে যেমন চিরাচরিত শক্তি উৎস ফুরাতে চলেছে, অন্য দিকে, দূষণও হচ্ছে। তাই যথাসম্ভব বাড়িতে আলো-হাওয়া খেলতে দিন। দিনের বেলা অন্তত আলোর জন্য যাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করতে হয় তা দেখুন।
এলইডি
এলইডি আলো বা বিদ্যুৎ খরচ কম হয় এমন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কিনুন। এতে এককালীন খরচ বাড়লেও, আদপে বিদ্যুতের খরচ কমবে। বিদ্যুতের সাশ্রয় হওয়া মানে প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্যও তা ভাল। এসির ব্যবহারও যথা সম্ভব কমানো উচিত। এসি থেকে যে গ্যাস নির্গত হয় তা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর। এই গ্যাসও বিশ্ব উষ্ণায়নের নেপথ্যে রয়েছে।
প্লাস্টিক নয়
খাবার জলের বোতল থেকে টিফিন কৌটো, বাজারে যাওয়ার ব্যাগ থেকে টেবিলের কভার, সবই এখন প্লাস্টিকের। ব্যবহারের সুবিধার জন্য বেশির ভাগ বাড়িতেই প্লাস্টিকের জিনিসের রমরমা। কিন্তু প্লাস্টিকের বোতলে জল খাওয়া কতটা বিপজ্জনক ও অস্বাস্থ্যকর তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্লাস্টিকের বোতলের বদলে পুরনো দিনে ফিরে যান। কলসিতে জল রাখুন। এখন রকমারি মাটির বোতল পাওয়া যায়। সেগুলি ব্যবহার করুন। স্টিল, তামা, কাচের বোতল জল খাওয়ার জন্য নিয়ে আসুন। টেবিলের কভার থেকে ব্যাগ, সমস্ত কিছুতেই প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব জিনিস বেছে নিন।
বর্জ্যের ব্যবহার
জৈব বর্জ্য, যেমন সব্জির খোসার, ডিমের খোসা দিয়ে গাছের পরিচর্যা করুন। সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। আর যেখানে-সেখানে প্লাস্টিকের ব্যাগ ছুড়ে ফেলবেন না। পাতলা ফিনফিনে প্লাস্টিকের ব্যবহার অত্যন্ত ক্ষতিকর। সচেতন ভাবে তা বাদ দিন। বাজার যেতে হলে জুটের ব্যাগ ব্যবহার করুন।