প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
কোভিড-পরবর্তী জটিলতা এখনও চলছে। দেশে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার এবং চিকিৎসকেরা নানা ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মাঝে এই রোগ সংক্রান্ত কিছু ভুয়ো খবর আতঙ্ক সৃষ্টি করছে সাধারণ মানুষের মনে। সম্প্রতি একটি পোস্ট ছেয়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে।
এই পোস্টে লেখা রয়েছে পেঁয়াজের গায়ে যে কালো রঙের ছত্রাক তৈরি হয়, তা নাকি অত্যন্ত বিষাক্ত। এবং তা থেকেই ছড়াতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। পোস্টে এ-ও লেখা রয়েছে, যে যদি এই ধরনের পেঁয়াজ ফ্রিজে রাখা হয়, তা হলে ফ্রিজের গায়েও এই কালো ছত্রাক ছেয়ে যাবে। এবং তা ছড়িয়ে পড়বে বাকি খাবারের মধ্যে। শুরুতে এই পোস্ট লেখা হয়েছিল হিন্দি ভাষায়। তারপর আরও নানা ভাষায় একই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে নেটমাধ্যমে।
পোস্টটা আদপে ভুয়ো। পেঁয়াজের গায়ে যে কালো ছত্রাক সাধারণত দেখা যায়, তার নাম অ্যাস্পারজিলাস নাইজার। মাটিতে পাওয়া যায় এই ছত্রাক। কিন্তু এটা বা ফ্রিজের ছত্রাক— কোনওটাই মিউকরমাইকোসিসের কারণ নয়। ফ্রিজ বহুদিন পরিষ্কার না করলে বা না খুললে কালো ছত্রাক তৈরি হয়। সেগুলো তৈরি হয় মূলত ব্যাক্টেরিয়া এবং ইস্টের জন্য। তা থেকে শাক-সব্জি-পাউরুটি-চিজের মতো খাবার খারাপ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মানুষের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হবে না।
এর আগেও এইম্সের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, মিউকরমাইকোসিস আদপে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নয়। নাকের উপর কালচে ছোপ হওয়ায় এই নাম দেওয়া হয়েছে। অনেক সময় মুখের এক অংশ ফ্যাকাসে হয়ে যায় এই সংক্রমণের কারণে। তা থেকেও অনেকের মনে হতে পারে, জায়গাটা কালো হয়ে যাচ্ছে।
পেঁয়াজের গায়ে যে কালো ছত্রাক তৈরি হয়, তা থেকে মিউকরমাইকোসিস শুধু নয়, কোনও রকমই সংক্রমণ মানুষের শরীরে সাধারণত হয় না। তবে পেঁয়াজ কাটার আগে অবশ্যই ভাল করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
(‘মিউকরমাইকোসিস’ আদৌ ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নয়। বস্তুত, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলে কোনও রোগ নেই বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
অথচ ঘটনাচক্রে, রোগটি এই নামেই আমজনতার কাছে অনেক বেশি পরিচিত। সেই কারণেই আনন্দবাজার ডিজিটাল সাধারণ ভাবে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নামটি ‘মিউকরমাইকোসিস’-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। অজ্ঞানতাবশত নয়।)