লহমার কাছে ফিট থাকার অন্যতম অনুপ্রেরণা তাঁর ‘জিৎ দা’ই। ছবি: সংগৃহীত
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক। লন্ডনের সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। বাবা ক্রীড়া সাংবাদিক। ছোট থেকেই ক্রীড়া জগতের রথী মহারথীদের সান্নিধ্যে বড় হয়ে ওঠা। অথচ খেলাধুলোর প্রতি আলাদা কোনও আকর্ষণ নেই তাঁর। বরং স্বপ্ন দেখতেন অভিনেত্রী হওয়ার। তিনি টলিউডের নতুন মুখ লহমা ভট্টাচার্য। আগামী ২৯ এপ্রিল, শুক্রবার তাঁর প্রথম ছবি ‘রাবণ’ মুক্তি পেতে চলেছে প্রেক্ষাগৃহে। এ ছবিতে লহমার বিপরীতে থাকছেন সুপারস্টার জিৎ। লহমার কাছে ফিট থাকার অন্যতম অনুপ্রেরণা তাঁর ‘জিৎ দা’ই।
ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে ‘রাবণ’-এর ট্রেলার এবং কয়েকটি গানও। তাতেই দর্শকের নজর কেড়ে নিয়েছেন নবাগতা অভিনেত্রী। অনেকেই বলছেন, ট্রেলারে লহমাকে দেখে প্রথম কাজ বলে মনে হচ্ছে না একেবারেই। বরং অনেক বেশি সাবলীল লাগছে। ছবির জন্য নিজেকে কী ভাবে প্রস্তুত করলেন লহমা তা নিয়ে দর্শকমহলে কৌতূহল জন্মেছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে অভিনয়ে জগতে আসার প্রস্তুতি পর্বের কথা জানালেন লহমা ভট্টাচার্য।
পড়াশোনার সূত্রে বেশ কিছুটা সময় দেশের বাইরে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। একাই থাকতেন সেখানে। ফলে ম্যাগি, চাউমিন, বাইরের খাবারই ছিল ভরসা। ওজনও বেড়ে গিয়েছিল বেশ খানিকটা। শ্যুটিং ফ্লোরে যাওয়ার আগে ১২ থেকে ১৩ কেজি ওজন কমিয়েছেন লহমা। এখন তিনি একেবারে মেদহীন, তন্বী। রইল লহমার রোজের খাদ্যাভ্যাসের তালিকা।
শ্যুটিং না থাকলেও সকালে ওঠাই লহমার অভ্যাস। ঘুম থেকে উঠে চুমুক দেন লেবু ও মধু মেশানো গরম জলে। এ ছাড়াও মাঝেমাঝে খালি পেটে এক চামচ আমলার রসও খান।
ছবির জন্য নিজেকে কী ভাবে প্রস্তুত করলেন লহমা, তা নিয়ে দর্শকমহলে কৌতূহল জন্মেছে। ছবি: সংগৃহীত
প্রাতরাশ: সকালের জলখাবারে নির্দিষ্ট কোনও রুটিন নেই। যখন যা ইচ্ছে হয় কিছু একটা খেয়ে নেন লহমা। কখনও পাতে থাকে সেদ্ধ ডিম। টাটকা মরসুমি ফল। বাড়িতে যদি লুচি হয় তা-ও খেয়ে নেন অভিনেত্রী।
দুপুরের খাবার: ভাত, ডাল, সব্জি, মাছ— বাড়িতে থাকলে সাধারণত এই থাকে লহমার রোজের খাবারে। আর শ্যুটিং থাকলে চিকেনের ঝোল বা স্টু দিয়ে রুটি খেয়ে নেন। কিংবা গ্রিলড চিকেন। দক্ষিণ ভারতীয় খাবার খেতে তিনি সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন। শুটিং থাকলে বাইরে থেকে তাই দুপুরে মাঝেমাঝে আনিয়ে নেন দোসা, ইডলি, উপমা।
সন্ধেবেলা: ফুচকার প্রতি তাঁর অসম্ভব ভালবাসা। বিশেষ করে তা যদি হয় বিবেকানন্দ পার্কের ফুচকা। বাড়িতে থাকলে খানিকটা চানাচুর মুড়ি খেয়ে নেন। কিংবা কখনও ড্রাইফ্রুটসও খান।
নৈশভোজ: ১০ টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আলাদা কিছু নয়, ভাত অথবা রুটি, সঙ্গে কোনও একটা সব্জি বা ডাল— বাড়িতে যে দিন যা রান্না হয় তাই খান লহমা। তাঁর মতে খাবারের পরিমাণ অল্প হলেই সব কিছু খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
শরীরচর্চা
সকালে উঠেই প্রথমে সূর্য প্রণাম করেন লহমা। তারপর কিছু যোগাসন, প্রাণায়াম করেন। খানিক বেলা হলে জিমে যান। এ ছাড়াও সালসা নাচতে ভালবাসেন। তাঁর মতে নাচ খুব ভাল কার্ডিও। তা ছাড়া ইউটিউব ভিডিয়ো দেখেও শরীরচর্চা করেন মাঝেমাঝে। তবে করোনার সময়ে যখন সব কিছু বন্ধ ছিল তখন তিনি হাঁটতে যেতেন। এখন আর সময়ের অভাবে সব সময় তা হয়ে ওঠে না।
ত্বক আর চুলের যত্ন কী ভাবে নেন লহমা?
ত্বক ভাল রাখতে সারা দিনে প্রচুর জল খান তিনি। লহমা মনে করেন, ত্বক কতটা ভাল থাকবে তা নির্ভর করে জল খাওয়ার পরিমাণের উপর। জল ছাড়াও শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখতে অ্যালোভেরার রসও খান। সরাসরি ত্বকের যত্ন নিতে ময়শ্চারাইজার হিসাবে বাড়িতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন লহমা। হলুদ, দুধের সর, টক দই দিয়ে বানানো ঘরোয়া ফেসপ্যাকও ত্বকের পরিচর্যায় ব্যবহার করে থাকেন লহমা।
আজকাল কমবয়সিদের মধ্যে চুলে তেল দেওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে। লহমা কিন্তু মাঝেমাঝে চুলে তেল গরম করে লাগান। তাতে তার চুল মজবুত, মসৃণ ও কোমল থাকে।