চুলে ‘লিভ-ইন’ কন্ডিশনার মাখবেন কেন? ছবি: সংগৃহীত।
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার মেখে মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হয়। তার পর আবার ভাল করে চুল ধুয়ে নিতে হয়। এই নিয়ম তো প্রায় সকলেরই জানা। কিন্তু সহকর্মীর মুখে কন্ডিশনার মেখে চুল না ধোয়ার গল্প শুনে প্রথমটায় খানিক খটকা লাগে সায়নীর। চুলে কন্ডিশনার মেখে রেখে দিলে কী কী ক্ষতি হতে পারে, তা বোঝাতে গিয়ে উল্টো বিপত্তি! সায়নীর সহকর্মী জানিয়েছেন, এই প্রসাধনীটি নাকি ভিজে চুলে মাখার পর ধুয়ে ফেলার প্রয়োজন পড়ে না।
অবশ্য নাম শুনেই তা খানিকটা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু তাদের কাজও কি আলাদা? কেশসজ্জা শিল্পী জলি চন্দের মতে, “সেই অর্থে কাজ হয়তো একই। কিন্তু লিভ-ইন কন্ডিশনার অনেক বেশি উন্নত। তাই এটির কাজ করার পরিধিও অনেকটা বিস্তৃত।”
শ্যাম্পু করার পর চুলে কন্ডিশনার না মাখলেই নয়। এ দিকে হাতে সময় নেই। কন্ডিশনার মেখে কমপক্ষে মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করতে হয়। ওই সময়টুকু ব্যয় করাও অফিসে বেরোনোর আগে বিলাসিতা। জলি বলেন, “এই সময়ে লিভ-ইন কন্ডিশনার মেখে নেওয়াই ভাল। ভিজে চুলে তা মেখে নিলে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত চুল নরম থাকে। ভিজে চুল শুকিয়ে যাওয়ার পরেও চট করে উস্কোখুস্কো হয় না। খুব সহজে চুলে স্টাইলও করা যায়।”
সাধারণ কন্ডিশনার এবং লিভ-ইন কন্ডিশনারের মধ্যে তফাত কোথায়?
লিভ-ইন কন্ডিশনার একেবারেই চটচটে নয়, খুব হালকা। যে হেতু এই প্রসাধনীটি মাখার পর চুল ধুতে হয় না, তাই বহু ক্ষণ পর্যন্ত তার প্রভাব থাকে। ফলে চুল সহজে আর্দ্রতা হারায় না। লিউ-ইন কন্ডিশনার চুলের উপর কার্যত ‘শিল্ড’ বা বর্মের মতো একটি আস্তরণ ফেলে দেয়। জলির বক্তব্য, “সাধারণ কন্ডিশনারের তুলনায় অনেক ভাল লিভ-ইন কন্ডিশনার। বিশেষ করে যাঁদের চুল অতিরিক্ত রুক্ষ, কোঁকড়ানো, তাঁদের জন্য এই প্রসাধনীটি বেশ কাজের।”
তবে এটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই যে, লিভ-ইন কন্ডিশনারের উপর স্ট্রেটনার বা কার্লারের মতো যন্ত্র ব্যবহার করা যায়। এ বিষয়ে জলির বক্তব্য, “লিভ-ইন কন্ডিশনার কিন্তু ‘হিট প্রোটেক্টর’ নয়। তাই এই ভুলটা একেবারেই করা যাবে না। চুলে কোনও রকম তাপ দেওয়ার আগে অবশ্যই তাপ নিরোধক সিরাম মাখতে হবে।”
একনজরে লিভ-ইন কন্ডিশনারের কাজ:
১) অতিরিক্ত শুষ্ক, ডগাফাটা চুল নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন? লিভ-ইন কন্ডিশনার এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উপকারী। এই প্রসাধনীটিতে রয়েছে ভিটামিন বি-৫, যা চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
২) লিভ-ইন কন্ডিশনারে আর্গন অয়েলও থাকে। এই অয়েলটি রুক্ষ, ক্ষতিগ্রস্ত চুলে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। কপালের উপর পড়ে থাকা ছোট ছোট, অবিন্যস্ত চুলগুলিও সামলে রাখা যায়।
৩) চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে মুঠো মুঠো চুল উঠে আসে? সমস্যার সুরাহা করতে পারে লিভ-ইন কন্ডিশনার। স্নান করার পর ভিজে চুলে এই প্রসাধনীটি মেখে চুল একেবারে শুকিয়ে নিন। তার বেশ কিছু ক্ষণ পর চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে নিমেষে জট খুলে যাবে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
স্নান করার পর ভিজে চুল তোয়ালে দিয়ে হালকা করে মুছে নিন। এ বার দু’হাতের তালুতে লিভ-ইন কন্ডিশনার নিয়ে আধশুকনো চুলে তা মেখে নিন। খেয়াল রাখবেন, প্রসাধনীটি যেন কোনও ভাবেই স্ক্যাল্পের সংস্পর্শে না আসে। চুলের মধ্যভাগ থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত মাখলেই হবে। যে কোনও ধরনের চুলেই লিভ-ইন কন্ডিশনার মাখা যায়। তবে তা চুলের ধরন বুঝে কিনতে হবে।