কী ভাবে বুঝবেন এ বার শ্যাম্পু করা দরকার? ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি দিন কাজে বেরোনোর তাড়া থাকলে অনেকেরই নিয়মিত চুল ভিজিয়ে স্নান করা সম্ভব হয় না। লম্বা চুল চট করে শুকোয় না। আবার ভিজে চুল বাঁধলে গোড়া আলগা হয়ে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। স্বাভাবিক ভাবে কারও কারও সপ্তাহে এক বারের বেশি শ্যাম্পু করাও হয়ে ওঠে না। কিন্তু, সপ্তাহে এক বার শ্যাম্পু করলেই কি চুল ভাল থাকবে? না কি সপ্তাহে দু’-তিন বারও চুল পরিষ্কার করা দরকার?
কারও চুল বেশি তৈলাক্ত নয়। কেউ আবার চুলের সজ্জায় রকমারি প্রসাধনী বা চুল সোজা করার বা কোঁকড়ানোর যন্ত্র ব্যবহার করেন না। এমন ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক বার শ্যাম্পুই যথেষ্ট। কিন্তু যিনি প্রতি দিন কাজে বার হচ্ছেন, মাথায় খুশকি বা অন্য সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম খাটবে না। তা হলে কী দেখে বুঝবেন, এ বার শ্যাম্পু করা প্রয়োজন?
তেলতেলে চুল
শ্যাম্পু করলেন, কিন্তু দু’দিনের মধ্যেই দেখলেন চুল কেমন তেলতেলে হয় গেল! মাথার ত্বক তৈলাক্ত হলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের চুল দেখলেই খুব পাতলা মনে হয়। যে কোনও রকম কেশসজ্জাতেও সমস্যা হয়। যাঁদের মাথার ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের চুলে ধুলো-ময়লা দ্রুত জমতে থাকে। এ ক্ষেত্রে কিন্তু সপ্তাহে এক বার শ্যাম্পু করলে চলবে না। বরং চুল অতিরিক্ত তেলতেলে মনে হল, বুঝতে হবে, শ্যাম্পু করা প্রয়োজন।
খুশকি
মাথায় কি প্রচুর খুশকি হচ্ছে? এর কারণও হতে পারে অপরিচ্ছন্ন মাথার ত্বক। চুল নরম এবং মসৃণ রাখতে মাথার ত্বকে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে সিবাম নামে তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসৃত হয়। কারও কারও সিবাম নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে খুশকির সমস্যা বেড়ে যায়। ঠিকমতো মাথার ত্বক পরিষ্কার না হলে, খুশকির সমস্যা তৈরি হতে পারে। অনেক সময় মৃত কোষ জমে গিয়েও খুশকির সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
চুলকানি
অনেক সময় গরমে, ঘামে মাথা চুলকায়। কখনও মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে এমন সমস্যা হয়। কখনও মাথা বেশি চুলকালে বুঝতে হবে, পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে। চুলে জেল, সিরাম-সহ কেশসজ্জার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকরণ ব্যবহারে চুলের উপর কৃত্রিম পরত জমতে থাকে। এর উপর ধুলো-ময়লা জমে মাথার ত্বকে প্রদাহ বা চুলকানির মতো সমস্যা তৈরি হয়। ঠিকমতো মাথা পরিষ্কার না করলে, ছত্রাক সংক্রমণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ঘন ঘন মাথা চুলকালে বুঝতে হবে, শ্যাম্পু করার প্রয়োজন।
শুষ্ক চুল
অনেক সময় চুল সোজা করার যন্ত্র বা চুল কোঁকড়ানোর যন্ত্রের ব্যবহারে চুল শুষ্ক এবং নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। কেউ কেউ ‘ড্রাই শ্যাম্পু’ ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে কিন্তু দু’-তিন দিন অন্তর ভাল ভাবে জল দিয়ে শ্যাম্পু করে চুল ধোয়ার প্রয়োজন পড়ে।
চুল পড়া
চুল পড়ার অনেক কারণের মধ্যে একটি হতে পারে অপরিচ্ছন্ন মাথার ত্বক। ঠিকমতো মাথা পরিষ্কার না করা। অতিরিক্ত সিবাম নিঃসরণ, মৃত কোষ জমতে থাকা, ধুলো-বালি, ঘাম জমে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। চুল পড়া বৃদ্ধি পেলেও, নিয়মিত মাথা পরিষ্কার করা দরকার।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। মাথা চুলকানো বা চুল পড়ার নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে। মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখা অবশ্যই জরুরি। তার পরেও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।