Amit Shah

অমিতের সামনেই এনআরসি-বিরোধী যুবাকে মার

পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বয়ং অমিতকে মাইক নিয়ে চিৎকার করে বলতে হল, ‘‘আরে ভাই থামুন! সিকিয়োরিটিওয়ালারা দ্রুত গিয়ে ওকে সরিয়ে নিয়ে আসুন!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১১
Share:

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র

এনআরসি-র বিরোধিতা করে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হাতে বেধড়ক মার খেলেন এক যুবক। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বয়ং অমিতকে মাইক নিয়ে চিৎকার করে বলতে হল, ‘‘আরে ভাই থামুন! সিকিয়োরিটিওয়ালারা দ্রুত গিয়ে ওকে সরিয়ে নিয়ে আসুন!’’

Advertisement

সামনেই দিল্লির ভোট। আজ রাজপথে কুচকাওয়াজের পরই একটি রোড-শো করেন অমিত। তার পর রাতে দিল্লির বাবরপুরে জনসভা করছিলেন তিনি। সেখানে উচ্চগ্রামে বলছিলেন, ‘‘ভোটের দিন যখন (ইভিএমের) বোতাম টিপবেন, সমস্ত রাগ ঢেলে দিয়ে টিপবেন। বাবরপুরের রাগের ‘কারেন্ট’ যেন শাহিন বাগে গিয়ে লাগে!’’

এমন সময়ে সামনের ভিড়ের মধ্যে থেকেই কেউ স্লোগান তুললেন,‘‘এনআরসি ফেরত নিন!’’ বক্তৃতায় ব্যস্ত ছিলেন অমিত, সে ভাবে হয়তো শোনেনওনি কথাটা। কিন্তু বিজেপি কর্মী-সমর্থকে ঠাসা ভিড় আক্রমণাত্মক হয়ে উঠল নিমেষে। ক্যামেরায় ধরা থাকল, লোহার চেয়ার উঠিয়ে রীতিমতো মারধর করা শুরু হয়ে গেল সেই ব্যক্তিকে। মঞ্চ থেকে সেটি দেখতেও পেলেন অমিত। আর সঙ্গে সঙ্গে তিনিই মাইকে বললেন, ‘‘আরে ভাই থামুন। সিকিয়োরিটিওয়ালারা দ্রুত পৌঁছন। নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান ওই ব্যক্তিকে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: শাহিনবাগে দাদিরা বললেন, বাঁচাতে হবে দেশ

কে শোনে কার কথা! উন্মত্ত ভিড় মারধর থামায়নি। ভিড় ঠেলে পুলিশের পৌঁছতেও সময় লাগল। একটু আগে যে অমিত সকলকে ক্রুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তিনিই বক্তৃতা বন্ধ রেখে বারবার মারধর থামানোর নির্দেশ দিতে থাকলেন।

এ মাসের গোড়ার দিকে দিল্লিরই লাজপতনগর এলাকায় ভোটের প্রচারে অমিতের মিছিলের নাকের ডগায় বাড়ির বারান্দা থেকে সিএএ-বিরোধী ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন দুই মহিলা। চেঁচিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমরা সিএএ চাই না।’’ সে বার বিজেপির সমর্থকেরা খোলাখুলি শাসিয়েছিল তাঁদের। পরে প্রতিবাদিনী ওই আইনজীবী সূর্যা রাজাপ্পন এবং তাঁর বান্ধবীকে ভাড়াবাড়ি থেকে জোর করে উঠিয়ে দেওয়া হয়। আজ অমিতের চোখের সামনে প্রতিবাদীর গায়ে হাত তুলতেও পিছপা হল না শাসকের সমর্থকরা।

মারধরে আহত যুবকের পরিচয় রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। জানা যায়নি পুলিশ তাঁকে কোথায় নিয়ে গেল। তবে রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ দিনের ঘটনায় একটা বিষয় পরিষ্কার। মোদী-শাহ যতই চান, এনআরসি-সিএএ নিয়ে প্রতিবাদের ঢেউ তাঁদের তাড়া করে ফিরছে। ভোট প্রচারে বারবার তাঁদের শুনতে হচ্ছে সেই বিরোধিতার স্বর। আর যতই সেই স্বর প্রকট হচ্ছে, ধমকেচমকে, মেরেধরে তা দাবিয়ে দিতে মরিয়া হচ্ছে শাসক শিবির। অমিত যতই ‘শাহিন বাগ-মুক্ত’ দিল্লি গড়ার ডাক দিন, এ দিন শাহিন বাগের জমায়েত তাঁর চিন্তাই বাড়িয়েছে। পুলিশ গিয়ে আহত যুবককে উদ্ধার করার পরে অমিত দৃষ্টি ঘোরাতে

স্লোগান তুললেন, ‘ভারতমাতা কি জয়!’ কিন্তু দিল্লি-জয় সহজ হবে কি না, প্রশ্নটা থেকেই গেল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement