সুখবীর সিংহ বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি চলার সেই মূহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত।
বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের বাইরে শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি চলার ঘটনায় এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম নারায়ণ সিংহ চৌরা। অমৃতসর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরের গুরুদাসপুর জেলার বাসিন্দা তিনি। কে এই ব্যক্তি? কেনই বা সুখবীরের উপর হামলা চালালেন তিনি?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণ এক জন প্রাক্তন খলিস্তানি জঙ্গি। এর আগেও একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। নারায়ণের নামে জেল ভেঙে পালানোর ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
৬৮ বছর বয়সি নারায়ণের জন্ম ১৯৫৬ সালে। কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দেওয়ার সময়ই অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ১৯৮৪ সালে পাকিস্তানে পাড়ি দেন নারায়ণ। সেখান থেকে পঞ্জাবে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারের চক্র শুরু করেন। ছ’বছর ধরে গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন তিনি। ওয়ান্টেড তালিকায় থাকলেও তাঁর নাগাল পায়নি পুলিশ। পাকিস্তানে থাকাকালীন গেরিলা যুদ্ধ এবং নিষিদ্ধ সাহিত্যের উপর একটি বইও লেখেন। এর পর ’৯০ এর দশকে দেশে ফিরে আসেন চৌরা। দেশে এসেও তিনি পঞ্জাবের অমৃতসর, তরন তারন এবং রোপার জেলায় একাধিক অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন।
২০০৪ সালে বুড়াইল জেল ভাঙার ঘটনাতেও দোষী সাব্যস্ত হন নারায়ণ। ওই ঘটনায় তিনিই ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’ ছিলেন। ৯৪ ফুট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বাব্বর খালসা-র আন্তর্জাতিক জঙ্গি জগতার সিংহ হাওয়ারা, পরমজিৎ সিংহ ভেওরা এবং তাঁদের দুই সহযোগী জগতার সিংহ তারা ও দেবী সিংহকে বুড়াইল জেল থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন নারায়ণ। সে সময় দীর্ঘ দিন ধরে কারাগারের বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেন তিনি।
বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের প্রবেশপথের ঠিক সামনে শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীরকে লক্ষ্য করে গুলি চলে। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান সুখবীর। লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলি তাঁর পাশ কাটিয়ে দেওয়ালে গিয়ে লাগে। তবে মূহূর্তে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। এর পরেই উপস্থিত লোকজন মিলে হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর পিস্তলটিও।