সুখবীর সিংহ বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর সেই মূহূর্ত। ছবি: সংগৃহীত।
শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি। বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের বাইরে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন সুখবীর। গুলি তাঁর গায়ে লাগেনি। উপস্থিত লোকজন হামলাকারীকে ধরেও ফেলেছেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
বুধবার সকালে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরের প্রবেশপথের ঠিক সামনেই অকালি দলের প্রধানকে লক্ষ্য করে গুলি চালান এক প্রৌঢ়। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় গুলি। অল্পের জন্য বেঁচে যান সুখবীর। তবে মূহূর্তে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। উপস্থিত মানুষজন ছুটে গিয়ে হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর পিস্তলটিও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম নারায়ণ সিংহ চৌরা। অমৃতসর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরের গুরুদাসপুর জেলার বাসিন্দা তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বুধবার সকালে স্বর্ণমন্দিরে ঢুকছিলেন সুখবীর। সেই সময়েই ধীর পায়ে তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন ওই প্রৌঢ়। এর পরেই আচমকা জামার ভিতরে লুকিয়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রটি বার করে অকালি প্রধানকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন। ওই প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুখবীরের উপর হামলার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। ঘটনায় অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
২০১৫ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রামরহিমকে ‘অন্যায় ভাবে’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সুখবীরকে দোষী সাব্যস্ত করে ‘সাজা’ শুনিয়েছিল অকাল তখ্ত। শিখ ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের সেই আদেশ শিরোধার্য করে মঙ্গলবারের পর বুধবার সকালেও ‘সাজা’ খাটতে ভাঙা পায়ে হুইলচেয়ারে চেপে অমৃতসর স্বর্ণমন্দিরে পৌঁছে যান সুখবীর। অকাল তখ্ত-এর নির্দেশ অনুযায়ী, ‘সেবাদার’ হয়ে গুরুদ্বারের রান্নাঘর এবং শৌচালয় পরিষ্কার করার কথা ছিল তাঁর।
অভিযোগ, ২০১২-১৭ সালে পঞ্জাবে অকালি দল-বিজেপি জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন গুরমিত রামরহিমকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সুখবীর। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি অকাল তখ্তের জাঠেদার জ্ঞানী রঘুবীর সিংহের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ‘বিচারসভা’ বসে। সোমবার বিচারসভা সুখবীরকে ‘তঙ্খাইয়া’ (ধর্ম অবমাননাকারী) ঘোষণা করে। এর পরেই সুখবীর-সহ অন্যান্য অকালি নেতাকে গুরুদ্বারের শৌচালয়, রান্নাঘর সাফাই করার ‘সাজা’ শোনানো হয়।