আপাতত জিএমপি-র মাপকাঠি অনুযায়ী ভারতের ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)-এর কাছে নিজেদের তুলে ধরাই এখন লক্ষ্য হায়দরাবাদের সংস্থাটির। তত দিন পর্যন্ত রফতানির জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে ভারতে তৈরি টিকা কোভ্যাক্সিনের সরবরাহ আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে বলে ঘোষণা করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
হঠাৎ এই পদক্ষেপে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, তা হলে কি প্রতিষেধকটির নিরাপত্তা বা কার্যকারিতা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা রয়েছে? যা উড়িয়ে দিয়েছে হু। তারা আশ্বস্ত করেছে, তেমন কিছু নয়। বরং টিকাটির উৎপাদন কেন্দ্রগুলি উন্নত করার পাশাপাশি সেখানে বিশেষ কয়েকটি ঘাটতি মেটানোর কথা বলা হয়েছে নির্মাতা সংস্থা হায়দরাবাদের ‘ভারত বায়োটেক’কে। যত দিন না সেই কাজ শেষ হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে প্রতিষেধক পাঠানো থেকে বিরত থাকছে সংস্থাটি।
হু-র তরফে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত বিবৃতি জারি করা হয় শনিবার। সেখানে বলা হয়েছে, গত ১৪ থেকে ২২ মার্চের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষেধকগুলির উপরে একটি সামগ্রিক নিরীক্ষণ চালানো হয় হু-র তরফে। বিশেষ নজর দেওয়া হয় টিকা উৎপাদন সংক্রান্ত পদ্ধতি এবং তার উন্নত করার প্রয়োজনীয়তার দিকে। একই সঙ্গে, প্রচলিত ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ বা জিএমপি-র মাপকাঠি অনুযায়ী তুল্যমূল্য বিচার চালানো হয় সংশ্লিষ্ট দলের তরফে। তার ভিত্তিতেই কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হু।
ফলে আপাতত রফতানির জন্য কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর প্রভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে টিকাটি সরবরাহে ইতি পড়ল। যদিও এখনও পর্যন্ত যাঁরা এই টিকাটি নিয়েছেন তাঁদের এর কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে বার বার আশ্বস্ত করেছে হু। তাদের কাছে টিকাটির উপযোগিতা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
একই কথা জানানো হয়েছে ভারত বায়োটেকের তরফেও। তাদের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষ, যাঁরা কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন তাঁদের উদ্দেশে জানানো হচ্ছে যে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আপনাদের টিকা সংক্রান্ত শংসাপত্রটি বৈধই থাকছে। কারণ কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তায় কোনও সমস্যা নেই।’’ আর হু-র নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিষয়ে ভারত বায়োটেকের বক্তব্য, ‘‘হু-র নির্দেশ মেনে আগামী বেশ কয়েক মাস উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে রক্ষণাবেক্ষণ, পদ্ধতিগত উন্নয়ন এবং উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হবে।’’
এ দিকে হু-র তরফে আরও জানানো হয়েছে, উৎপাদন ক্ষেত্রে উন্নতি নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষকদলের তুলে ধরা ঘাটতির বিষয়ে একমত হয়েছেন ভারত বায়োটেকের আধিকারিকেরা। দলটির পরামর্শ মেনে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। আপাতত জিএমপি-র মাপকাঠি অনুযায়ী ভারতের ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)-এর কাছে নিজেদের তুলে ধরাই এখন লক্ষ্য হায়দরাবাদের সংস্থাটির। তত দিন পর্যন্ত রফতানির জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।