কর্নাটক হাই কোর্টে হিজাব মামলার শুনানি পড়েছে চতুর্থ দিনে। প্রতীকী চিত্র।
কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু হিজাব নিষিদ্ধ? হিজাব কোনও সম্প্রদায় বা ধর্মীয় চিহ্ন হলে দোপাট্টা, বালা, পাগড়ি, টিপ,ক্রস—এসব কী? হিজাব মামলায় কর্নাটক হাই কোর্টে এমনই সওয়াল করলেন মামলাকারী ছাত্রীর আইনজীবী।
বুধবার চারদিনে পড়েছে কর্নাটক হাই কোর্টের হিজাব মামলার শুনানি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে মামলা করেন এক কলেজ ছাত্রী। ওই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী রবিবর্মা কুমার সওয়াল করেন, ‘‘ভারতের মতো বহু ভাষাভাষী সব সম্প্রদায়েরই একটি ধর্মীয় প্রতীক রয়েছে। সেটা তাদের পোশাক-পরিচ্ছদেই প্রকাশ পায়। তা হলে সরকার কেন শুধু হিজাবকে আলাদা করে বৈষম্য তৈরি করছে? হাতের বালা ধর্মীয় প্রতীক নয়? ঘোমটা চলবে, বালা চলবে আর হিজাব চলবে না কেন?’’
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাকারীর আইনজীবী এও জানান, শুধুমাত্র হিজাব পরার জন্য তাঁর মক্কেলকে কলেজের ক্লাস করতে না দেওয়া সংবিধানের অবমাননা। আইনজীবীর কথায়, ‘‘কপালে টিপ পরা মহিলাকে ক্লাসের বাইরে যেতে বলা হয় না। বালা পরিহিতাকেও নয়। এমনকী ক্রিস্টান মহিলার ক্রসেও আপত্তি নেই। তাহলে শুধু হিজাব নিয়ে কেন আপত্তি?’’ তিনি আরও বলেন, এমনিতে যে কোনও কলেজের শ্রেণিকক্ষে মুসলিম ছাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। তার পর এরকম সিদ্ধান্ত তাঁদের শিক্ষার সুযোগ থেকে আরও দূরে সরিয়ে দেবে।
প্রসঙ্গত, কর্নাটকে হিজাব-বিতর্কের শুরুয়াত গত ডিসেম্বরে। উদুপির এক সরকারি কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে সরব হন ছয় ছাত্রী। ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। এর পর হস্তক্ষেপ করে আদালত। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাই কোর্ট অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে জানায়, আপাতত কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব বা অন্য কোনও ধর্মীয় পোশাক পরে যাওয়া যাবে না।