অসমে অমৃতপাল সিংহের জেলবন্দি সঙ্গীসাথীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে হিমন্তবিশ্ব শর্মার সরকার, দাবি খলিস্তানি নেতার। —ফাইল চিত্র।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের মেয়ের পর এ বার খলিস্তানিদের হুমকির শিকার হলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। রবিবার সংবাদমাধ্যমে অসমের ডজনখানেক সাংবাদিকের দাবি, হিমন্তর উদ্দেশে একটি অডিয়ো বার্তায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকার নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গুরপটবন্ত সিংহ পান্নু। সেই অডিয়ো বার্তাটি পেয়েছেন তাঁরা। তাতে বলা হয়েছে, খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংহের জেলবন্দি সঙ্গীসাথীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে অসম সরকার। সে জন্য হিমন্তকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওই অডিয়ো বার্তায় বলা হয়েছে, ‘‘অসমে জেলবন্দি খলিস্তানিদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। খুব মন দিয়ে শুনুন মুখ্যমন্ত্রী শর্মা, খলিস্তানি শিখের লড়াই ভারতীয় শাসন এবং মোদীর বিরুদ্ধে। এই হিংসার শরিক হবেন না শর্মা। ভারতের দখলদারি থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে খলিস্তান গণভোটের মাধ্যমে পঞ্জাবের স্বাধীনতা চাই আমরা। আপনার সরকার যদি (জেলবন্দি) ছ’জনের উপর অত্যাচার চালায়, তবে আপনি দায়ী থাকবেন। ‘শিখস ফর জাস্টিসে’র জেনারেল কাউন্সেল গুরপটবন্ত সিংহ পান্নুর তরফে এ বার্তা দেওয়া হল।’’
‘পঞ্জাব ওয়ারিশ দে’ সংগঠনের নেতা অমৃতপালের বিরুদ্ধে ১৮ মার্চ অভিযানে নেমে এখনও পর্যন্ত ৭৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পঞ্জাব পুলিশ। যদিও অধরা রয়ে গিয়েছেন অমৃতপাল। তবে ধৃতদের মধ্যে অমৃতপালের কাকা হরজিৎ সিংহ, তাঁর দেহরক্ষী বারীন্দর সিংহ-সহ ৮ জন ঘনিষ্ঠ রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁদেরকে কড়া নিরাপত্তায় অসমের ডিব্রুগড় জেলে রাখা হয়েছে।
অমৃতপালের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপের পর ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া-সহ নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন খলিস্তানপন্থীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে বিট্রেনে ভারতীয় হাই কমিশনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগও উঠেছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর আমেরিকানিবাসী মেয়ে শ্রীরত কউরকেও। এ বার কি সে তালিকায় জুড়ল হিমন্তের নামও?
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ‘শিখস ফর জাস্টিসে’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা নিউ ইয়র্কের আইনজীবী পান্নু আদতে পঞ্জাবের বাসিন্দা ছিলেন। খলিস্তানের দাবিতে ২০২০ সালে একটি গণভোটের নেপথ্যেও তাঁর ভূমিকা ছিল। যদিও ২০১৯ সালে ‘শিখস ফর জাস্টিস’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এমনকি, পান্নুকে ধরার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টারপোলেরও সাহায্য চেয়েছিল বলে দাবি।