ভোটমুখী কর্নাটকে গোরক্ষকদের তাণ্ডব। — প্রতীকী ছবি।
ভোটমুখী কর্নাটকে এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বঘোষিত গোরক্ষকরা। অভিযোগ, গরু পরিবহণের বৈধ কাগজপত্র দেখালেও মেলেনি ছাড়। ওই যুবকদের কাছে ২ লক্ষ টাকা ঘুষও চান স্বঘোষিত গোরক্ষকরা। টাকা না দেওয়ায় পিটিয়ে খুন। পুলিশ ইতিমধ্যেই স্বঘোষিত গোরক্ষকদের পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের রামনাগারা জেলায়।
আগামী ১০ মে কর্নাটকে বিধানসভা ভোট। তার ঠিক আগে স্বঘোষিত গোরক্ষকদের তাণ্ডবে উত্তপ্ত হল রাজ্য। কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারের নির্বাচনী কেন্দ্রে ঘটা এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিহত যুবকের বাড়ির লোকজন পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
জানা গিয়েছে, মাণ্ড্য জেলার বাসিন্দা ৩৫ বছরের ইদ্রিস পাশা গাড়িতে গবাদি পশু নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই খবর পেয়ে সাথানুর শহরের কাছে দলবল নিয়ে জড়ো হন পুনীত কেরেহাল্লি নামে এক স্বঘোষিত গোরক্ষক। ইদ্রিসের গাড়ি আসতেই তা থামানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, কন্টেনারের ভিতরে কী আছে? জবাবে ইদ্রিস জানান, গবাদি পশু। তার পর কেরেহাল্লি প্রশ্ন তোলেন, ওই গবাদি পশু যে চুরির নয়, তা কী করে প্রমাণিত হবে? পুলিশ সূত্রে খবর, জবাবে বৈধ কাগজপত্র দেখান ইদ্রিস। জানান, পশুর মেলা থেকে গবাদি পশুগুলি কিনেছেন তিনি। কিন্তু তা বিশ্বাস করা তো দূরস্থান, ইদ্রিসকে গাড়ি থেকে নামিয়ে শুরু হয় মার। তাঁকে পাকিস্তান চলে যেতেও বলা হয়।
এক দফা মারধরের পর ইদ্রিসকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি শর্ত দেন স্বঘোষিত গোরক্ষকরা। ‘দ্য হিন্দু’ সংবাদপত্রে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ইদ্রিসের কাছে ২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও কেন টাকা দিতে হবে? সেই প্রশ্ন করেন ইদ্রিস। আবার শুরু হয় মারধর। মার থেকে বাঁচতে পালিয়ে যান ইদ্রিস। তাঁকে তাড়া করেন কেরেহাল্লির কয়েক জন অনুগামী।
সেই সময় এক পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছন এবং ইদ্রিসের দুই সঙ্গী এবং কেরেহাল্লিকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে কেরেহাল্লি ইদ্রিসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন গরু চুরি করে পাচারের। তদন্তে নেমে পুলিশ একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। জানা যায়, দেহটি ইদ্রিসের।
এর পরেই ইদ্রিসের সঙ্গীদের অভিযোগের ভিত্তিতে কেরেহাল্লির বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় স্বঘোষিত গোরক্ষককে। এ ক্ষেত্রে মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।