Uttar Pradesh Assembly Election 2022

Uttar Pradesh Poll 2022: যোগীর আশি-বিশ বনাম অখিলেশের বাটে তো কাটে, কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে!

‘বাবা’ নির্ভর করছেন মেরুকরণের রাজনীতির উপর। যে সাম্প্রদায়িক তাস উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে বারবার। সেই আশি-বিশ ফর্মুলা। বিতর্ক বাধায় নিজের মতো করে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন যোগী। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের নিহিত অর্থ খুব স্পষ্ট— উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত।

Advertisement

অনিন্দ্য জানা

লখনউ শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৫৮
Share:

উত্তরপ্রদেশের জনতা বলছে, এ বার আড়াআড়ি লড়াই যোগী-অখিলেশের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

লখনউ শহরের হজরতগঞ্জের ক্যাপিটল তেরাহায় (তিন রাস্তার মোড়) বিজেপি-র রাজ্য দফতর। বিশাল অফিস। মূল ফটক দিয়ে ঢোকার মুখে মোদী-শাহ-নড্ডা-যোগীর পোস্টার। তাতে লেখা ‘সোচ ইমানদার, কাম অসরদার’। অফিসের চত্বরে ছড়িয়েছিটিয়ে দেশি-বিদেশি গাড়ি। দরজায় দরজায় উর্দিধারী বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীর ভিড়। বিজেপি, হাজার হোক, ক্ষমতাসীন দল। ফলে ঠাটবাট, ঠমকগমকই আলাদা।

ঘটনাচক্রে, সেই দফতরের প্রায় উল্টোদিকেই রাজ্য বিধানসভা ভবন। যার দখল নিয়ে লড়াই চলছে উত্তরপ্রদেশে। বিজেপি দফতরের অনতিদূরে, একই ফুটপাথে, বিধানসভা ভবনের ঠিক উল্টোদিকে একটা চমৎকার পাথুরে স্থাপত্যের বিশাল ইমারত। এটা উত্তরপ্রদেশের ‘নবান্ন’। লড়াই এই বাড়ি দখলেরও।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা। ৪১৩টি আসন। গত ভোটে বিজেপি একাই ৩০০ টপকে গিয়েছিল। ছবি: পিটিআই।

একঝলক দেখলে মনে হয়, বিজেপি অফিস থেকে বেরিয়ে রাস্তাটা পেরিয়েই টুক করে ঢুকে পড়া যাবে বিধানসভায়। আর দফতরের ফুটপাথ ধরে হাঁটলে ডানদিকে বাঁক নিয়েই সটান সচিবালয়ে।

যেমন পাঁচ বছর আগে ঘটেছিল। ৪০৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩২৫ আসন পেয়েছিল বিজেপি জোট (বিজেপি একাই ৩১২)। যা দলত্যাগ এবং অন্যান্য কারণে কমতে কমতে আপাতত এসে ঠেকেছে ৩০০-র কিছু কমে। তা অবশ্য ‘ম্যাজিক ফিগার’ ২০২ আসন থেকে অনেক বেশি। তবু পাঁচ বছর পরের পরিস্থিতি সহজ নয়।

পরিস্থিতি খানিক সঙ্গিন বলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। নইলে কি তিনি আর বারবার বলতেন, এ হল ‘আশি-বিশের ভোট’। তার বেশি কিছু যোগী ভেঙে বলেননি। উল্টে বিতর্ক বাধায় নিজের মতো করে একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের নিহিত অর্থ খুব স্পষ্ট— উত্তরপ্রদেশে হিন্দু-মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত। যোগীর শাসনাধীন রাজ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ হিন্দু। প্রায় ২০ শতাংশ মুসলিম। অর্থাৎ, মেরুকরণের পাটিগণিতের হিসেবে ৮০ শতাংশের দিকে পাল্লা ভারী।

Advertisement

পরিস্থিতি খানিক সঙ্গিন বলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যোগী আদিত্যনাথ। নইলে কি তিনি আর বারবার বলতেন, এ হল ‘আশি-বিশের ভোট’। ছবি: পিটিআই।

যোগী সরাসরি বলেছেন, ‘‘৮০-২০ হল একটা বাস্তব। এটা নিশ্চিত ভাবেই আশি-বিশের নির্বাচন। ২০ শতাংশ হল সেই লোকগুলো, যারা রামজন্মভূমির বিরোধিতা করেছে। যারা কাশী বিশ্বনাথ আর মথুরার উন্নয়নের বিরোধিতা করছে। ২০ শতাংশ হল সেই লোকগুলো, যারা মাফিয়া আর জঙ্গিদের সমর্থন করে। তারা মাফিয়া আর জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আশি-বিশের অঙ্ক ১০ মার্চ ভোটের ফল বেরনোর দিন বোঝা যাবে।’’

শুনতে শুনতে গতবছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে শুভেন্দু অধিকারীর প্রচারের কথা মনে পড়ছিল। বর্তমান বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, ‘‘আমরা ৭০, ওরা ৩০। অঙ্কটা বুঝে নিন।’’

সেই ‘অঙ্ক’ বুঝতে গেলে ফলাফল সত্যিই সরল। কিন্তু রাজনীতির অঙ্কে সবসময় দুইয়ে-দুইয়ে চার হয় না। অনেক সময় পাঁচ বা তিনও হতে পারে। জনতা বলছে, এ বার আড়াআড়ি লড়াই যোগী-অখিলেশের। তাদের বক্তব্য বা দাবি মানতে গেলে বলতে হয়, বাকি দুই বিরোধীপক্ষ কংগ্রেস এবং মায়াবতীর বসপা এই ভোটে ‘অপ্রাসঙ্গিক’। সে ক্ষেত্রে কিন্তু বিজেপি-র লড়াই আরও কঠিন। হাতের সামনে উদাহরণ পশ্চিমবঙ্গ। গত বিধানসভা ভোটে রাজ্যে চারটি মূলস্রোতের দল ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে দু’টি দল ‘দুধভাত’ হয়ে গিয়েছিল। সিপিএম-কংগ্রেসের সেই ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে যাওয়া বিজেপি-কে যে কী বিপাকে ফেলেছিল, তা গোটা দেশ জানে।

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের ফল ভুলে যায়নি বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে জনতার রায় তাদের এবং সমাজবাদী পার্টির মধ্যে আড়াআড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। ছবি: পিটিআই।

তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর বসপার ভোট ছিল ২২.২৩ শতাংশ। সেটা এ বার কমবে। কিন্তু ১৫ শতাংশের নীচে নামবে না বলেই দাবি মায়াবতী শিবিরের। ভোটের প্রথমদিকে সে ভাবে প্রচারে নামেননি ‘বহেনজি’। শেষবেলায় নেমেছেন। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ অমিত শাহ বলেছেন, শেষদিকের দফাগুলোয় বসপা খুব ভাল ফল করবে। মায়াবতী সে কথা শুনে পাল্টা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন অমিত শাহকে। এই পারস্পরিক পৃষ্ঠকণ্ডূয়নের মূল কথাটি কী? সেটি হল— অমিত শাহ বসপাকে তুলে ধরতে চাইছেন। কারণ, বসপার ভোট সমাজবাদী পার্টির (সপা) অখিলেশ যাদবের ঝুলিতে গেলে তাঁদের বিপদ। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ভোটে সপা-র ভোট ছিল ২১.৮২ শতাংশ। এ বার রাজ্যের দলিত ভোট অখিলেশের দিকে গেলে সেটা ৩০ শতাংশেও পৌঁছতে পারে।

অমিত শাহের মুখে মায়াবতীর প্রশংসার পাশাপাশিই অসমর্থিত সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী যোগীর ঘনিষ্ঠমহল থেকে সংবাদমাধ্যমের একাংশকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর প্রচার গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রচার করতে। আর তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ছিল ৬.২৫ শতাংশ। সেটা এ বার আরও কমে ৫ শতাংশ হতে পারে। সেই ভোটও যেতে পারে অখিলেশের মুসলিম-যাদব সমীকরণের বাক্সে।

মায়াবতীর প্রশংসা করছেন শাহ। যোগী চাইছেন, প্রিয়ঙ্কার প্রচার গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রচার হোক। উদ্দেশ্য স্পষ্ট। বসপা আর কংগ্রেসের ভোট যাতে সপায় গিয়ে না পড়ে। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যের মুসলিমরা এ বার খোলাখুলিই বলছেন, তাঁদের ভোট ভাগ হতে দেওয়া চলবে না। সমস্ত মুসলিম ভোট সপা-কে দিতে হবে। যোগীর বিতর্কিত ‘আশি-বিশ’ ফর্মুলার পাল্টা তাঁদের স্লোগান— ‘বাটে তো কাটে’। অর্থাৎ, ভোট যেন ভাগ না হয়! ভোট বাঁটোয়ারা হলে মাথা কাটা পড়বে!

বিজেপি অবশ্য দাবি করছে, তারা আগেও মুসলিম ভোট পেয়েছে। এ বারও পাবে। রাজ্য বিজেপি-র তরুণ মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠীর কথায়, ‘‘আশি-বিশকে সম্প্রদায়গত ভাবে দেখা হচ্ছে। দেখছে তারাই, যাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গি আছে। কিন্তু এতে সম্প্রদায়গত কিছু নেই। ২০১৭ সালেও আমরা মুসলিম ভোট পেয়েছিলাম। এ বারও পাব। এমন নয় যে, মুসলিমরা আমাদের ভোট দিচ্ছেন না। মনে রাখবেন, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও আমরা রাজ্যে ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম।’’

রাকেশের আরও দাবি, ‘‘এ বারও আমরা ৩০০ পার করবই। এটা ঠিক যে, প্রথম দু’দফায় আমাদের আসন গতবারের চেয়ে কমতে পারে। কিন্তু সেই ১১৩টা আসনে গতবার পাওয়া আসনের চেয়ে বড়জোর ৫ থেকে ১০টা কমবে। তার বেশি নয়।’’

বিজেপি কর্মীরা স্বীকার করছেন, যোগীর বিরুদ্ধে না হলেও লোকের রাগ আছে দলের মন্ত্রী-বিধায়কদের একটা অংশের বিরুদ্ধে। যাঁদের অনেকে এ বারও প্রার্থী হয়েছেন। ছবি: পিটিআই।

গত পাঁচ বছরে রাজ্যে কী করেছে বিজেপি?

রাকেশ গড়গড় করে বলে যান, ‘‘২০১৭ সালে আমাদের স্লোগান ছিল: না গুন্ডারাজ, না ভ্রষ্টাচার, অব কি বার, ভাজপা সরকার। আমার সেটা করে দেখিয়েছি। পুলিশকে দিয়ে গুন্ডাদের বিরুদ্ধে এনকাউন্টার করিয়েছি। এখন পুলিশের মনোবল অনেক উঁচু তারে বাঁধা। কারণ, আমরা মনে করি পুলিশ আইন রক্ষা করবে। আমরা পুলিশকে কাজ করার সেই স্বাধীনতা দিয়েছি। যারা আগে জিপসিতে অস্ত্র নিয়ে ঘুরত, তারা এখন হুইলচেয়ারে ঘোরে!’’

রাকেশ বলেন বুন্দেলখণ্ডে পানীয় জল সমস্যা মেটানোর কথা। বলেন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার কথা। বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে এই রাজ্যে বিদ্যুৎ নিয়ে একটাও বিক্ষোভ বা রাস্তা অবরোধ হয়নি।’’ পাশাপাশিই বলেন করোনাকালে বিনাপয়সায় প্রতিটি পরিবারকে রেশন দেওয়ার কথা। যার কথা অস্বীকার করে না রাজ্যের জনতাও। কিন্তু পুরনো লখনউয়ের রুমি দরওয়াজা, বড়া ইমামবড়া এলাকার মুসলিমরা বলেন, ‘‘বিনাপয়সার রেশন পাই ঠিকই। চাল-ডাল-তেল-ছোলা আসে। কিন্তু সে তো মার্চ মাসেই শেষ। ভোটের পর আর দেবে না!’’ আবার গোমতীনগর বা নতুন লখনউ এলাকার হিন্দু বাসিন্দারা বলেন, ‘‘যা রেশন, সবই তো নিয়ে যায় মুসলিমরা!’’

রাজ্যে কি একটা প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া কাজ করছে?
মথুরার মন্দিরের সামনে দাঁড়ানো বিজেপি-র নিচুতলার কর্মী পণ্ডিত বালকৃষ্ণ রাধাকৃষ্ণ শাস্ত্রীর কথা মনে পড়ছিল, ‘‘লোকের রাগ একটা আছে। কিন্তু সেটা বাবার (যোগী) বিরুদ্ধে নয়। সেটা বিধায়কদের একটা অংশের বিরুদ্ধে। আর কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। যাঁরা বিপুল ভোটে জেতার পর আর এলাকার দেখভাল করেননি। ওই লোকগুলোর এ বার টিকিট কাটা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা করা হয়নি। তার একটা ফল ভোটে পড়বে। কিন্তু ভোট হবে বাবার নামেই।’’

বাবা? শুনে খানিকটা ক্রুদ্ধই দেখাল সপা-র প্রবীণ মুখপাত্র রাজেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। বললেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষায় কথা বলেন, তা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। ওঁর ব্যবহারই অগণতান্ত্রিক। সেটা উত্তরপ্রদেশের মানুষ বুঝে গিয়েছেন।’’

সপা নেতাদের দাবি— যাদব, জাঠ, ভূমিহার ভোট ২০১৭ সালে ঢেলে বিজেপি-তে পড়েছিল। এ বার তা হবে না। পাশাপাশি দলিত, কৃষক এবং তরুণ প্রজন্ম একেবারেই ভোট দেবে না বিজেপি-কে। ছবি: পিটিআই।

লখনউ শহরের বিক্রমাদিত্য মার্গে সপা-র রাজ্য দফতর। গেটে পুলিশি প্রহরা। পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকতে হল। প্রশস্ত এলাকা। সাদা রঙের স্বচ্ছল চেহারার বাংলো ধাঁচের একতলা বাড়ি। উচ্চতা নেই। কিন্তু বহরে যথেষ্ট বড়। কর্পোরেট চেহারা। প্রচুর গাছপালা। যদিও লোকজন বিশেষ চোখে পড়ল না।

ভিতরে একটা ফাইভ-এ-সাইড ফুটবল মাঠের সাইজের ঘাসজমি। তার সামনে ধাপে ধাপে সিঁড়ির মতো উঠে গিয়েছে ছোট গ্যালারি। মাঠের উল্টোদিকে স্থায়ী মঞ্চ। গ্যালারিতে বসেন দলের ছোটমাপের নেতা-সমর্থকেরা। মঞ্চ থেকে বড় নেতারা বাণী দেন। জমির এক পাশে একতলা বাড়ির সমান উঁচু একটা সাইকেল। সবুজ আর লাল রঙের। জানা গেল, সেটা সেল্‌ফি তোলার পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

মুখপাত্রের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে এখনও দেওয়াল জোড়া মুলায়ম। তুলনায় ছোট ছবি অখিলেশের। স্বাভাবিক। মুলায়ম এখন প্রবীণদের ‘নেতাজি’। অখিলেশ তরুণদের। চিনি-ছাড়া চা আনতে বলে রাজেন্দ্র দাবি করলেন, ‘‘বিজেপি এই ভোটে খুব খারাপ ভাবে হারবে। তিন অঙ্কেও পৌঁছবে না। সপা বিপুল গরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করবে। গত পাঁচ বছরে বিজেপি রাজ্যের মানুষের উপর ব্যাপক অত্যাচার করেছে। নিপীড়ন করেছে। ব্যবসায়ীদের হত্যা করেছে। অনেকে পুলিশি অত্যাচারের মুখে আত্মহত্যা করেছেন। এর ফল ফলবে ভোটে।’’

গত পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশ জুড়ে রয়েছে ভারতীয় রাজনীতির বিভিন্ন মাইলফলক। নির্বাচনের আবহে আনন্দবাজার অনলাইন সেই সমস্ত দিকচিহ্ন ছুঁয়ে দেখার যাত্রায়। এটি দ্বাদশ কিস্তি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আর আশি-বিশ ফর্মুলা?

রাজেন্দ্র বলছেন, ‘‘ওই ৮০ শতাংশের মধ্যে যাদব, দলিত, জাঠ, ভূমিহার ভোট মিলিয়ে আছে ৩০ শতাংশ। বাকি রইল ৫০ শতাংশ। তার সবটাই তো আর উচ্চবর্ণ নয়। দেখুন না কী হয়!’’

সপা নেতাদের দাবি, বিজেপি-র ভাগ্য মূলত নির্ভর করছে যাদব, জাঠ, ভূমিহার ভোটের উপর। এই তিনটি জাতই ২০১৭ সালে বিজেপি-কে ঢেলে ভোট দিয়েছিল। এরা এ বার পদ্মে বোতাম টিপবে না। হাথরস, উন্নাও বা লখিমপুর খেড়ির ঘটনার কারণে দলিতরা বিজেপি-কে ভোট দেবেন না। আবার কৃষক আন্দোলনের ফলে জাঠ ভোট বিজেপি-র পক্ষে যাবে না। বেকার সমস্যা বেড়েছে। ফলে তরুণ প্রজন্ম এখন সপা-র পাশে। অফিলেশের সভায় লোকও হচ্ছে ব্যাপক।

লখনউয়ের এক বিজেপি নেতা অবশ্য বললেন, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে পুরোপুরি না-হলেও খানিকটা জাঠ ভোট তাঁরা ঘোরাতে পেরেছেন। কিন্তু ‘যোগীবাবা’ নির্ভর করছেন সেই মেরুকরণের রাজনীতির উপরেই। যে সাম্প্রদায়িক তাস উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে বারবার। অর্থাৎ, সেই আশি-বিশ ফর্মুলা।

শুনতে শুনতে কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার মনে পড়ছিল, ‘কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।’ (চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement