এই চিত্র দেখা যাবে না উত্তরপ্রদেশে। ফাইল চিত্র।
থ্রি ডি স্টুডিয়ো প্রযুক্তির মাধ্যমে মাধ্যমে জনসভা। প্রতিটি বুথের জন্য একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটারে নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘ওয়ার রুম’।
অতিমারির প্রকোপে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক দলগুলি বাধ্য হয়েছে এমন ভার্চুয়াল প্রচারের প্রস্তুতিতে। আগামী ১৫ তারিখের পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সংক্রমণের হাওয়া বুঝে বিজেপি, এসপি, আরএলডি, কংগ্রেসের মতো দলগুলি ধরে নিচ্ছে এ মাসে মাঠে নেমে প্রচার সম্ভব হবে না। তাই পাল্লা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিয়ো-প্রচারে নেমেছে তারা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই কাজে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। সূত্রের বক্তব্য, প্রথমত, উত্তরপ্রদেশের তাদের জোর অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, আইটি সেল নির্ভর প্রচার ও প্রযুক্তিতে দীর্ঘদিন ধরেই পারদর্শী যোগী আদিত্যনাথের দল। তাদের নেতা, কর্মীরাও নিত্য নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক বেশি পরিচিত উত্তরপ্রদেশের অন্য দলগুলির তুলনায়।
অন্য দিকে, মুলায়ম সিংহ যাদবের আমলে ডিজিটাল প্রযুক্তির কোনও বালাই ছিল না, যে টুকু ছিল, তারও কোনও চর্চা হয়নি। অখিলেশ কুর্সিতে বসার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের রেওয়াজ শুরু হয়। কিন্তু বিজেপির তুলনায় তা বরাবরই খুবই মন্থরই থেকেছে। পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসও এখন উঠেপড়ে লেগেছে ভার্চুয়াল প্রচারে। প্রিয়ঙ্কা নিজে ফেসবুক লাইভ শুরু করেছেন রাজ্যের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, দিল্লিতেই একটি ‘গ্রিন রুম’ তৈরি করা হবে। শুধু উত্তরপ্রদেশই নয়, সমস্ত ভোটমুখী রাজ্যের জেলাগুলির নেতাদের সঙ্গে ভিডিয়ো মাধ্যমে সংযোগ রাখা হবে ২৪ ঘণ্টা। ডিজিটাল সভার জন্য প্রচারবস্তুও বিশেষ ভাবে তৈরি করার কথা ভাবছে কংগ্রেস।
বিজেপির এক কর্তার কথায়, “যখন তৃতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার আলোচনা চলছিল, সেই তখন থেকেই ভার্চুয়াল প্রচারের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ভিডিয়ো এবং নেট-প্রচারের জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা করা হয়ে গিয়েছে।” প্রচারে থ্রি ডি স্টুডিয়ো ম্যাক্স টেকনোলজির ব্যবহার করতে দেখা যাবে বিজেপিকে। অর্থাৎ, প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় থাকা নেতাদের একই মঞ্চে দেখা যাবে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে বিজেপির দেড় লাখ বুথ ভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপগুলিতে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তের ভার্চুয়াল জনসভা সরাসরি দেখা যাবে। স্থানীয় স্তরে ‘ওয়ার রুম’ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ রাখার জন্য।
সূত্রের মতে, মায়াবতীর বিএসপি এ ব্যাপারে অনেকটাই পিছিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তাদের কোনও নির্দিষ্ট প্রশিক্ষিত দল নেই। সমস্যা হল, বিএসপি ভোট ব্যাঙ্কের একটি বড় অংশেরই প্রযুক্তিতে তেমন অভ্যস্ত নন। ভার্চুয়াল দুনিয়া সম্পর্কে ধারণাও কম। সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির মতো ছোট দলগুলিও অবশ্য ভার্চুয়াল মাধ্যমের উপর নির্ভর করছেন না। দলের প্রেসিডেন্ট ওম প্রকাশ রাজভড় বলেন, “আমাদের সমাজ ভোট কবে আসবে তার জন্য নির্ভর করে না। আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত আছি।”