শনিবার অসমের কছাড় জেলায় ১৭ বছরের এক কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রতীকী ছবি।
পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে বিয়ের আগেই আত্মঘাতী হলেন অসমের কাছাড় জেলার এক কিশোরী। রবিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনই দাবি করেছেন ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যেরা। শনিবার ১৭ বছরের ওই কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযোগ, বাল্যবিবাহ আইনভঙ্গকারী হিসাবে পরিবারের সদস্যদের ধরপাকড় করা হতে পারে, এই ভয়েই বিয়ের আগে নিজেকে শেষ করেছেন কিশোরী। যদিও পুলিশের দাবি, অন্য কোনও কারণে এ পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার নুমল মহাট্টা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় ধলাইয়ের রাজনগর এলাকায় ওই কিশোরীর বাড়ির কাছে একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছে। খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছে, এটা আত্মহত্যার ঘটনা। পরিবারে নিশ্চয়ই কোনও এমন বিষয় হয়েছিল, যার জন্য তাঁকে এ পদক্ষেপ করতে হয়েছে। এর সঙ্গে বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযানের সম্পর্ক নেই।’’
যদিও পুলিশের বক্তব্য খারিজ করে দিয়েছেন কিশোরীর মা। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘নিজের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতে চেয়েছিল আমার মেয়ে। অসম সরকার বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযান শুরুর আগেই মেয়ের বিয়ে স্থির হয়েছিল। ওর পছন্দমতো আমরাও বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। প্রায়শই কনের সাজে ঘুরে বেড়াত মেয়ে। তবে যে দিন থেকে জানতে পারল, বাল্যবিবাহ বিরোধী অভিযান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সে দিন থেকেই ওর ব্যবহার পাল্টে গিয়েছিল। শুক্রবার ওই অভিযানে অনেকের স্বামীকে গ্রেফতারির ঘটনার পর নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথাও বলত।’’
অসম জুড়ে বাল্যবিবাহ আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ১৪ বছরের কমবয়সি মেয়েকে বিয়ে করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম মন্ত্রিসভা। অন্য দিকে, যে পুরুষেরা ১৪-১৮ বছর বয়সি মেয়েদের বিয়ে করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু করা হবে। বাল্যবিবাহের অনুষ্ঠানে থাকা ধর্মগুরু বা পুরোহিতদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর থেকেই বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে ধরপাকড় শুরু করেছে অসম পুলিশ। সংবাদমাধ্যমের দাবি, এখনও পর্যন্ত ২,০০০ জনের বেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।