উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই ।
উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গের অন্ধকারে খেলায় মজেছেন আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক। অবসর সময় কাটাতে চোর-পুলিশ এবং তাস খেলে সময় পার করছেন তাঁরা। একই সঙ্গে চলছে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে খোলা বাতাসে নিশ্বাস নেওয়ার এবং পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হবে বলে উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরেই আটকে পড়েন সুড়ঙ্গে কর্মকত ৪১ জন শ্রমিক। সেই ঘটনার ১২ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও উদ্ধার করা যায়নি শ্রমিকদের। রাজ্য এবং কেন্দ্র— উভয় সরকারই ৪১ জন শ্রমিককে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। উদ্ধারকারীদের তরফে জানানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই ভাঙা সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথর সরিয়ে বার করে আনা হবে ওই ৪১ জনকে। কিন্তু তাঁদের বার করে আনতে আরও ১৫-১৬ ঘণ্টা লাগবে বলেই মনে করছেন প্রশাসিক কর্তারা। এ হেন পরিস্থিতিতে সুড়ঙ্গের ভিতরে তাস এবং চোর-পুলিশ খেলে সময় কাটাচ্ছেন আটকে থাকা শ্রমিকেরা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুড়ঙ্গের মধ্যে সময় কাটাতে তিন পাত্তি, রামির মতো তাসের খেলায় মেতেছেন শ্রমিকেরা। চলছে চোর-পুলিশ খেলাও। অন্ধকার সুড়ঙ্গে মাঝেমধ্যে লুকোচুরিও খেলছেন ওই শ্রমিকেরা। তবে তাঁরা বাইরে থেকে তাস নিয়ে ভিতরে ঢুকেছিলেন না খাবার, জল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পাশাপাশি তাঁদের বাইরে থেকে তাস পাঠানো হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তাঁরা মোবাইলে তাস খেলছেন কি না, তা-ও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ১২ দিনের প্রথম কয়েক দিন উৎকণ্ঠায় কাটলেও উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পর থেকে তাঁদের মনে আশার আলো জেগেছে। সুড়ঙ্গের মধ্যে একে অপরের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন আটকে থাকা শ্রমিকেরা।
প্রসঙ্গত উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সুড়ঙ্গের মুখে আটকে থাকা পাথরের স্তূপ খুঁড়ে শ্রমিকদের অনেকটাই কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া গিয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের পাইপের মধ্যে দিয়ে বাইরে বার করে আনা হবে। সুড়ঙ্গের বাইরে বেরিয়ে এলেই যাতে ওই শ্রমিকদের সঠিক চিকিৎসা করা হয়, তার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুল্যান্সও।