আইডিএসপির কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল দেশে ফুসফুসের সংক্রমণ এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ কতটা বেড়েছে? ছবি : সংগৃহীত।
রোগ বাড়েনি। তবু হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসের (এইচএমপিভি) সংক্রমণ নিয়ে দেশের সব ক’টি রাজ্যকে নজরদারি বৃদ্ধির পরামর্শ দিল কেন্দ্র। বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে বলা হল, ফুসফুসের সংক্রমণজনিত অসুস্থতা (সারি) বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুখ (ইলি)-এর হার বাড়ছে কি না, সে ব্যাপারে।
এইচএমপিভি-র প্রভাবে মূলত ওই দু’ধরনের অসুখই হতে দেখা যায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাই ইন্টিগ্রেটেড ডিজ়িজ় সারভেল্যান্স প্রোগ্রাম (আইডিএসপি)কে নির্দেশ দিয়েছে সমস্ত সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস বা সারি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস বা ইলির রোগীকে এইচএমপিভি পরীক্ষা করাতে হবে। কর্নাটকে ইতিমধ্যেই দু’টি এইচএমপিভি সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছে। সে রাজ্যেরই এক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অধিকর্তা বলছেন, ‘‘কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, এইচএমপিভি-র ‘টেস্ট কিট’-ও অবিলম্বে সমস্ত রাজ্যে পাঠানো হবে।’’
এইচএমপিভি-র ‘টেস্ট কিট’-ও অবিলম্বে সমস্ত রাজ্যে পাঠানো হবে। ছবি: সংগৃহীত।
এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়ে দেশে উদ্বেগ এবং জল্পনা বাড়তেই উদ্যোগী হয়েছিল কেন্দ্র। আইডিএসপির কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল দেশে ফুসফুসের সংক্রমণ এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ কতটা বেড়েছে? বা আদৌ বেড়েছে কি না। সপ্তাহখানেক আগেই কেন্দ্রকে তার রিপোর্ট দেয় আইডিএসপি। আইডিএসপির তরফে জানানো হয়, দেশে সারি বা ইলির হার নজরে পড়ার মতো বাড়েনি মোটেই। আইডিএসপি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, ডিসেম্বরে গোটা দেশে শুধুমাত্র ন’জনের শরীরে এইচএমপিভির উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে কেউই মারা যাননি।
আইডিএসপির ওই রিপোর্ট বলছে, ডিসেম্বর ৭১৪ জনের এইচএমপিভি পরীক্ষা করা হয়েছিল ভারতে। তার মধ্যে ১.৩ শতাংশের শরীরে ওই ভাইরাস ধরা পড়েছে। ডিসেম্বর এইচএমপিভি সংক্রমিত ন’জনের মধ্যে চার জন ছিলেন পুদুচেরির, দু’জন ওড়িশার এবং ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি থেকে এক জন করে। এঁরা প্রত্যেকেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
ভারতের তিনটি শিশুর শরীরে এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে। ছবি: সংগৃহীত।
চিনে হঠাৎ এইচএমপিভি সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনায় ভারতীয়দের একাংশের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। অনেকেই এইচএমপিভির সঙ্গে করোনা ভাইরাসের তুলনাও টানছিলেন। যদিও কেন্দ্রীয় চিকিৎসা সংগঠন আইসিএমআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ) প্রথম থেকেই বলে আসছে, ‘‘এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। তা ছাড়া ওই ভাইরাসে ভারতে নতুনও নয়। ২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ওই ভাইরাস। তার অস্তিত্ব অনেক আগে থেকেই ভারত-সহ বহু দেশে ছিল।’’ কিন্তু তার পরেও গত কয়েক দিনে ভারতের তিনটি শিশুর শরীরে এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে। আইডিএসপি অবশ্য জানিয়েছে, দেশে এইচএমপিভি সংক্রমণের যে পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে, তা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। তা সত্ত্বেও আগামী দিনে তারা এইচএমপিভি সংক্রমণের দিকে কড়া নজর রাখতে চলেছে।