সংঘর্ষে জড়িত অভিযোগে এক যুবককে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সোমবার দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীতে। ছবি— পিটিআই।
হনুমান জয়ন্তীর যে মিছিলকে কেন্দ্র করে দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের সূত্রপাত, সেই মিছিলের অনুমোদনই ছিল না। এমনই জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এই ঘটনায় মিছিলের এক আয়োজককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জহাঙ্গিরপুরীর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জহাঙ্গিরপুরীর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছেন দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে।
পুলিশ জানিয়েছে, হনুমান জয়ন্তীতে তিনটি মিছিল বেরিয়েছিল। প্রথম দু’টির অনুমোদন থাকলেও তৃতীয়টির জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। সেই মিছিল থেকেই সংঘর্ষ বাধে। এই ঘটনায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ভিএইচপি নেতা প্রেম শর্মাকে।
দিল্লির পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা জানিয়েছেন, সামান্য বচসা থেকে দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এখনও সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখছে, সেই ঘটনায় আর কে কে জড়িত ছিল। তাঁর আশ্বাস, তদন্তে কোনও রকম পক্ষপাত করা হবে না। গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় যারা যুক্ত তারা যে ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রেরই হোক না কেন, কাউকেই ছাড়া হবে না। ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশের ১৪টি দল গঠন করা হয়েছে।
ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও আজও থমথমে জহাঙ্গিরপুরী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবারের ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজে সোনু চিকনা নামে স্থানীয় এক যুবককে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছিল। সোনুর সন্ধানে আজ জহাঙ্গিরপুরীতে গিয়েছিল পুলিশের একটি দল। সোনুকে না পেয়ে তার পরিজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে সেখানে পুলিশ পৌঁছতেই তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। এই ঘটনার পিছনে সোনুর আত্মীয়, বন্ধুরাই রয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুতর নয়। সেখান থেকে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ শেখ হামিদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় হামিদ জানায়, ঘটনার সময়ে যে বোতল ছোড়া হয়েছিল, সেই বোতলের জোগান দেয় পেশায় স্ক্র্যাপ ডিলার হামিদই।
দিল্লির রোহিনীর নিম্ন আদালত আজ আসলাম ও আনসার নামে দুই অভিযুক্তকে আরও দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই আনসারের সঙ্গেই অন্য গোষ্ঠীর কয়েক জনের প্রাথমিক ভাবে বচসা শুরু হয়েছিল। তা গড়ায় সংঘর্ষে।
আজ রাকেশ জানিয়েছেন, কিছু মানুষ সমাজমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছে। দিল্লি পুলিশ সমাজমাধ্যমে নজর রাখছে। যে বা যারা ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না।
জহাঙ্গিরপুরীর ঘটনায় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং পাঁচটি তরোয়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণও খতিয়ে দেখছে ফরেন্সিক দল। আজ ঘটনাস্থলে ফরেন্সিকের চারটি দল গিয়েছে।