নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং মনমোহন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের আবহে ভারতের ‘ভারসাম্যের কূটনীতি’ নিয়ে গোটা বিশ্বেই চর্চা চলছে। শনিবার থেকে শুরু হতে চলা জি২০ সম্মেলনে এই ভারসাম্য কতটা রক্ষা করা যাবে, তা-ই এখন দেখার। এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের গৃহীত বিদেশনীতির পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। রাজনৈতিক দূরত্বকে সরিয়ে তিনি জানালেন, এ ক্ষেত্রে ‘সঠিক কাজ’ই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে পাশে দাঁড়ালেও একটি বিষয়ে সরকারকে সতর্কও করেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।
জি২০ বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মনমোহন বলেন, “ভারত শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, নিজের সার্বভৌমত্ব এবং অর্থনৈতিক স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সঠিক কাজ করেছে।” প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়াকেই এই যুদ্ধের জন্য দায়ী করে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি। রাশিয়াকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে সে দেশ থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয় তারা। ভারতকেও সেই একই পন্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও, ‘জাতীয় স্বার্থে’র কথা বলে মস্কোর কাছ থেকে অশোধিত তেল কেনা চালু রাখে ভারত।
তবে একই সঙ্গে সতর্কবার্তা দিয়ে মনমোহন জানান, ঘরোয়া রাজনীতির জন্য বিদেশনীতিকে ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ঘরোয়া রাজনীতি কিংবা দলের জন্য কূটনীতি এবং বিদেশনীতিকে ব্যবহার করার অনুশীলন, তা বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ।” নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলন নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মনমোহন বলেন, “আমি খুশি যে, অনুক্রম অনুসারে এ বার জি২০ সম্মেলনের উদ্যোক্তা ভারত। আমি আমার জীবৎকালেই দেশের মাটিতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে দেখছি।”
দুই বা ততোধিক শক্তি পারস্পরিক সংঘাতে লিপ্ত হলে যে অন্য দেশগুলির উপর চাপ তৈরি হয়, সে কথাও উল্লেখ করেছেন মনমোহন। সেই প্রেক্ষিত থেকেই ভারতের অবস্থান ‘সঠিক’ বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য যে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রায় এক দশক দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একাধিক জি২০ সম্মেলনে উপস্থিত থেকেছেন মনমোহন।