এই ঘটনা প্রসঙ্গে তামিলনাড়ুর রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি নারায়ণন তিরুপতি অবশ্য দাবি করেন সিনেমাটি দেখার আয়োজন বিজেপি করেনি। —ফাইল চিত্র।
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমার প্রদর্শনী নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এ বার বিক্ষোভের মুখে বিজেপি নেতাদের জন্য ছবিটির স্পেশাল স্ক্রিনিং বা বিশেষ প্রদর্শনী বন্ধ করল তামিলনাড়ু পুলিশ।
একাধিক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১০ মে, বুধবার সকালে চেন্নাইয়ের একটি নামী প্রেক্ষাগৃহে ‘দ্য কেরলা স্টোরি’র বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন ১০-১২ জন বিজেপি নেতা। কিন্তু সিনেমাটি দেখানো যায়নি। প্রবল বিক্ষোভের জেরে তামিলনাড়ু পুলিশ ওই প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে। সিনেমা না দেখেই ফিরে যেতে হয়েছে আমন্ত্রিত দর্শকদের। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তামিলনাড়ুর রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি নারায়ণন তিরুপতি অবশ্য দাবি করেন সিনেমাটি দেখার আয়োজন বিজেপি করেনি। দলের কয়েক জন নেতাকে ছবিটি দেখার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।
গত ৫ মে পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ মুক্তির পর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বস্তুত, সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। ছবিতে দেখানো হয়েছে কেরলের ৩২ হাজার মহিলা ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরিত হন। পরে তাঁরা জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখাতে বাধ্য হন। শুধু হিন্দু নয়, খ্রিস্টান মহিলাদেরও ধর্মান্তরিত করা হয়। নির্মাতারা বলছেন, এই ছবি সত্য ঘটনা অবলম্বন করে তৈরি হয়েছে। কিন্তু প্রতিবাদীদের যুক্তি, এই ৩২ হাজার সংখ্যার তথ্য কোথা থেকে পেলেন নির্মাতারা। তাছাড়া যাকে ‘সত্যি ঘটনা’ বলে দাবি করা হয়েছে, তারই বা উৎস কী। এ নিয়ে সমালোচনা-বিতর্কের মধ্যে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি যেমন মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ ছবিটিকে করমুক্ত করেছে। আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘দ্য কেরালা স্টোরির’ প্রদর্শনী নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্যে। গত ৮ মে ১৯৫৪ সালের পশ্চিমবঙ্গ সিনেমা (রেগুলেশন) অ্যাক্টের আওতায় ছবিটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন সিনেমার নির্মাতারা। অন্য দিকে, তামিলনাড়ুতেও ছবিটি ছদ্ম-নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দক্ষিণের রাজ্যে যাতে সিনেমাটি দেখানো যায়, আদালতের কাছে তার রক্ষাকবচ চেয়েছেন ছবির নির্মাতারা।