—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
অবসাদের চিকিৎসা চলছিল। পরিবারের অভিযোগ, তার উপর ছিল কাজের ‘অমানুষিক চাপ’। সেই ‘চাপ’ কি বাড়িয়ে তুলেছিল অবসাদ? তৈরি হয়েছিল এক বৃত্ত? যে বৃত্ত ভাঙতেই চরম পথ বেছে নিলেন চেন্নাইয়ের ইঞ্জিনিয়ার? ইলেকট্রিক তার জড়িয়ে মৃত্যুর এক দিন পর এই প্রশ্নেরই উত্তর পেতে চাইছে মৃত ইঞ্জিনিয়ারের পরিবার।
দীর্ঘ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। চিকিৎসাও চলছিল। ৩৮ বছরের সেই যুবক আত্মহত্যা করেন চেন্নাইয়ের বাড়িতে। মৃত পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। অভিযোগ, কাজের জায়গায় চাপের কারণে এই চরম পদক্ষেপ করেছেন তিনি। যদিও পুলিশ বা মৃতের পরিবার এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
মৃতের নাম কার্তিকেয়। তিনি আদতে তামিলনাড়ুর থেনি জেলার বাসিন্দা। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন চেন্নাইয়ে। এক সন্তানের বয়স ১০ বছর, এক জনের বয়স আট বছর। গত ১৫ বছর ধরে একটি সফটওয়্যার সংস্থায় কাজ করছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই চাকরি ছেড়ে চেন্নাইয়ের অন্য একটি সংস্থায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। অবসাদের চিকিৎসাও চলছিল।
মৃতের পরিচিতদের একাংশের দাবি, কাজের চাপের কারণে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। পুলিশ এই নিয়ে কিছু জানায়নি। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেখানে তিনি পরিবারের সকলের উদ্দেশে কিছু না কিছু বার্তা দিয়েছেন। কেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার কার্তিকেয়র স্ত্রী কে জয়ারানি চেন্নাই থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে একটি মন্দিরে যান। যাওয়ার পথে নিজের বাপের বাড়িতে দুই সন্তানকে রেখে যান। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ের বাড়িতে ফেরেন। ফিরে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। নিজের কাছে রাখা চাবি দিয়ে দরজা খুলে স্বামীর দেহ দেখতে পান। গলায় জড়ানো ছিল বৈদ্যুতিক তার। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি কেরলের বাসিন্দা অ্যানা সেবাস্টিয়ান পেরায়িলের মৃত্যু ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পুণেতে একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতেন বছর ২৬এর অ্যানা। গত ২০ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়। কন্যার মৃত্যুর জন্য তাঁর সংস্থার অতিরিক্ত কাজের চাপকেই দায়ী করেছেন অ্যানার বাবা-মা। তাঁদের অভিযোগ, কাজের চাপ এতটাই ছিল যে, ঘুম, খাওয়াদাওয়া ভুলে দিনরাত কাজেই ব্যস্ত থাকতে হত অ্যানাকে। ঠিক মতো খেতে পারতেন না তাঁদের কন্যা, পারতেন না ঘুমোতেও। অ্যানার বাবা সিবি জোসেফ জানিয়েছেন, কন্যা মাঝেমধ্যেই কাজের চাপের বিষয়টি তাঁদের কাছে জানাতেন। অ্যানার ওই পরিস্থিতি দেখে তাঁকে কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। যদিও কাজের চাপে মৃত্যুর তত্ত্ব এড়িয়ে গিয়েছে অ্যানার সংস্থা।