‘নিচু’ জাতির মহিলা জল পান করেছেন বলে গোমূত্র দিয়ে জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করলেন কর্নাটকের একটি গ্রামের বাসিন্দা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রামের চারদিকে যত জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে, প্রতিটি ট্যাঙ্কে বড় বড় করে লেখা, ‘এখান থেকে সকলে জল খেতে পারেন।’ কিন্তু বাস্তবের ছবি একেবারেই উল্টো। শুক্রবার কর্নাটকের ছমরাজনগর জেলার হেগ্গোতারা গ্রামে এক মহিলা জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল পান করেছিলেন বলে গ্রামবাসীরা অবিলম্বে সেই ট্যাঙ্ক থেকে জল খালি করে ফেলেন এবং গোমূত্র ঢেলে পুরো ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করান।
জাতপাত নিয়ে ছুতমার্গ, তথাকথিত ‘নিচু’ সম্প্রদায়ের লোকজনের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ রীতিমতো চালু রয়েছে হেগ্গোতারা গ্রামের লোকেদের মধ্যে। তাঁদের ধারণা, তফসিলি জাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত মানুষ কোনও জিনিস ছুঁলে তা নাকি অপবিত্র হয়ে যায়। গ্রামবাসীর এই ধারণা সম্পর্কে জানতেন না তফসিলি জাতিভুক্ত এক মহিলা। ওই গ্রামে এক বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি।
গ্রামবাসীদের অনুমান, গ্রামের একটি জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল খেয়েছিলেন তিনি। তার পর সেই ট্যাঙ্কের জল পানের অযোগ্য বলে মনে করেন গ্রামবাসীরা। সেই ভাবনা থেকেই ট্যাঙ্ক খালি করে গোমূত্র ঢেলে পরিষ্কার করেন সেটিকে।
গ্রামবাসীদের অনেকের মতে, গোমূত্র ঢালা হয়েছে বলে ট্যাঙ্কটি ‘শুদ্ধ’ হয়েছে। ওই গ্রামের তহসিলদার আইই বসব্রজ জানান, ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করা হয়েছে ঠিক-ই, কিন্তু গোমূত্র দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও মহিলাকে জল পান করতে দেখা যায়নি। মহিলার খোঁজ পেলে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’ এই ঘটনার পর স্থানীয় আধিকারিকেরা তফসিলি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত কয়েক জনকে জড়ো করে ওই গ্রামের বিভিন্ন ট্যাঙ্ক থেকে জল পান করিয়েছেন।