প্রতীকী ছবি।
আস্থাভোটের মাত্র একদিন আগে শাসক জোটের দুই বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ায় পুদুচেরিতে রাজনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার এই মুহূর্তে কার্যত সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে।
কংগ্রেসের চারবারের বিধায়ক লক্ষ্মীনারায়ণ আজ ইস্তফা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বিধায়ক থাকলেও তাঁকে মন্ত্রী করার কথা বিবেচনা করে দেখেনি দল। স্বীকৃতি না মেলার কারণেই ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কংগ্রেস ছাড়বেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন লক্ষ্মীনারায়ণ। অন্য দিকে, আজই ইস্তফা দিয়েছেন শাসক জোটের আর এক বিধায়ক, ডিএমকে নেতা ভেঙ্কটেশন। তিনি অবশ্য ইস্তফার বিষয়ে কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। দুই বিধায়কের ইস্তফার মধ্য দিয়ে রাজ্য বিধানসভার ২৬টি আসনের মধ্যে শাসক জোটের শক্তি দাঁড়িয়েছে ১২।
গত মঙ্গলবার পুদুচেরির উপরাজ্যপালের পদ থেকে কিরণ বেদীকে সরানোর পরে সেই দায়িত্ব পেয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি টি সৌন্দর্যরাজন। রাজ্য সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে— বিরোধীদের এই দাবি মেনে নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণস্বামী সরকারকে আস্থাভোট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, পুদুচেরির বিরোধী দলগুলি উপরাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, কংগ্রেসের সরকারের আদৌ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে আস্থাভোটের পরীক্ষা দিতে হবে নারায়ণস্বামীকে। এর পর থেকে রাজ্যে রাজনৈতিক সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণস্বামী অভিযোগ করেছেন, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি তাঁর সরকার ফেলে দিতে চাইছে। তাঁর মতে, এর আগে গোয়া, মণিপুর, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশে পরিকল্পনা করে এমনই ঘটনা ঘটিয়েছিল বিজেপি। আগামিকাল বিকেল পাঁচটায় আস্থাভোটে যেতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। পুদুচেরিতে বিধানসভা ভোটের মাত্র তিন মাস আগে নারায়ণস্বামী তাঁর সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবেন কি না, কালই তা বোঝা যাবে। শাসক জোটের দুই বিধায়ক ইস্তফা দিলেও মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য আজ দাবি করেছেন, ওই বিধায়কদের ইস্তফা গৃহীত হয়নি।
সংখ্যা জোগাড় করে নারায়ণস্বামী তাঁর সরকার টিকিয়ে রাখতে পারলে অন্য কথা। তবে একই সঙ্গে অন্য কয়েকটি সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। যেমন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা ভঙ্গ করে ভোটের জন্য প্রস্তাব দিতে পারেন। আবার কংগ্রেসি সরকারের পতন হলে উপরাজ্যপাল এনআর কংগ্রেসকে বিকল্প সরকার গড়ার জন্যও ডাকতে পারেন। অথবা কোনও দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে পুদুচেরিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার জন্য সুপারিশ করতে পারেন উপরাজ্যপাল।