হিমাচলে আফতাব-শ্রদ্ধা তিন সপ্তাহ ছিলেন। তার পর ৮ মে দিল্লি চলে আসেন তাঁরা। এখানে দু’দিন পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে থাকেন। ছবি: ফেসবুক।
মুম্বইয়ের শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের পরতে পরতে রহস্য। সময় যত এগোচ্ছে, পুলিশের হাতে উঠে আসছে শিউরে ওঠার মতো তথ্য। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার দরুন মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে শেফের কাজ পেয়েছিলেন শ্রদ্ধার লিভ ইন সঙ্গী তথা এই খুনের মূল অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা।
ওই সূত্রের দাবি, হোটেলে দু’সপ্তাহ মাংস কাটার প্রশিক্ষণ নেন আফতাব। কী ভাবে মাংস টুকরো করতে হয়, তার পর সেই মাংস কী ভাবে সংরক্ষণ করতে হয়, কাজ করার সময় সবই শিখেছিলেন। পুলিশের সন্দেহ, শেফের কাজ করার সুবাদে শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো করার কাজে মাংস কাটার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছিলেন আফতাব।
শুধু তাই নয়, মাংস সংরক্ষণ করার অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি। তাই একটি ফ্রিজ কিনে শ্রদ্ধার শরীরের টুকরোগুলি ডিপ ফ্রিজ এবং তার নীচের ট্রে-তে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রেখে দিয়েছিলেন, এমনটাই ধারণা পুলিশের। তার পর ১৮ দিন ধরে প্রতি রাতে একটি একটি করে টুকরো মেহরৌলীর জঙ্গলে গিয়ে ফেলে আসতেন আফতাব।
পুলিশের দাবি, ৬ মাস আগে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব। তার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে সেই টুকরোগুলি জঙ্গলে ফেলে আসতেন। গত ৮ নভেম্বর ঘটনাটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত এপ্রিলেই শ্রদ্ধাকে খুনের পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন তাঁর লিভ ইন সঙ্গী। আর তাই পরিকল্পনা করেই শ্রদ্ধাকে নিয়ে হিমাচল প্রদেশে ঘুরতে গিয়েছিলেন, যাতে তাঁদের দু’জনের মধ্যে সন্দেহের যে আবহ তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গিয়ে সম্পর্ক মধুর হয়। হিমাচলে ঘুরতে যাওয়ার নামে দু’জনের সম্পর্কের তিক্ততাও মিটল, আর শ্রদ্ধার মনের সন্দেহও দূর হল। পুলিশের দাবি, এটাই ছিল আফতাবের ষড়যন্ত্রের অন্যতম অংশ।
হিমাচলে তাঁরা তিন সপ্তাহ ছিলেন। তার পর ৮ মে দিল্লি চলে আসেন। এখানে দু’দিন পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে থাকেন শ্রদ্ধা-আফতাব। টাকা ফুরিয়ে আসায় দু’জনে সাকেতে সৈদুলাজাওয়ে একটি বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসাবে ছিলেন। তার পরই এক বন্ধুর সহযোগিতায় আফতাব ছতরপুরে এমন এক জায়গায় বাড়ি ভাড়া নেন, যার খুব কাছেই জঙ্গল ছিল।