Sam Pitroda

কংগ্রেসের বৈদেশিক শাখার চেয়ারম্যান পদে ফিরলেন পিত্রোদা, গাত্রবর্ণ-বিতর্কের দেড় মাসের মাথাতেই

মে মাসের গোড়ায় একটি সাক্ষাৎকারে ভারতীয় বহুত্ববাদী ঐতিহ্য প্রসঙ্গে স্যাম বলেন, ‘‘দক্ষিণ ভারতের মানুষের সঙ্গে আফ্রিকার জনগোষ্ঠীর মিল রয়েছে।’’ তার পরে বিতর্কের জেরে ইস্তফা দেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ২১:৫৭
Share:

স্যাম পিত্রোদা। ছবি: পিটিআই।

দেড় মাসের মাথাতেই স্যাম পিত্রোদাকে পুনর্বহাল করল কংগ্রেস। বুধবার এআইসিসির তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাঁকে দলের বৈদেশিক (ওভারসিজ়) শাখার চেয়ারম্যানের পদে ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল ওই লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘মাননীয় কংগ্রেস সভাপতি দলের বৈদেশিক (ওভারসিজ়) শাখার চেয়ারম্যানের পদে স্যাম পিত্রোদাকে অবিলম্বে পুনর্নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন।’’

Advertisement

গাত্রবর্ণ সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে ‘ঘরে-বাইরে’ প্রবল বিতর্কের মুখে গত মে মাসে ওই পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন ‘গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত স্যাম। একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় বহুত্ববাদী ঐতিহ্যের মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেন, ‘‘দক্ষিণ ভারতের মানুষের সঙ্গে আফ্রিকার জনগোষ্ঠীর মিল রয়েছে। পশ্চিম ভারতীয়দের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে আরবীয়দের। পূর্ব ভারতের মানুষের চেহারার ধাঁচ কিছুটা চিনাদের মতো। কিন্তু এমন প্রভেদ সত্ত্বেও গত ৭৫ বছর ধরে আমরা সুন্দর পরিবেশে মিলেমিশে রয়েছি। তেমন কোনও জাতিগত সংঘাত সৃষ্টি হয়নি।’’

ওই মন্তব্যের পর থেকেই স্যামকে নিশানা করেছিল বিজেপি। পাশাপাশি গান্ধী-নেহরু পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্যামের প্রসঙ্গ টেনে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগে নিশানা করা হয় কংগ্রেসকেও। তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গলে বিজেপির ভোটপ্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেসের শাহজাদার পরামর্শদাতা গাত্রবর্ণ তুলে ভারতবাসীকে আক্রমণ করেছেন। আমি ক্রুদ্ধ। আমাকে আপনারা অনেক কটু কথা বলেছেন। আমি কিছু মনে করিনি। কিন্তু আমার দেশের মানুষকে আক্রমণ করলে সহ্য করব না।’’

Advertisement

লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে বিতর্কের মুখে কংগ্রেস দ্রুত আমেরিকা নিবাসী স্যামের মন্তব্যের দায় ঝেড়ে ফেলেছিল সে সময়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম বলেছিলেন, ‘‘ভারতের জাতিগত বৈচিত্রের কথা বোঝাতে গিয়ে স্যাম পিত্রোদা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কংগ্রেস তাঁর ওই মন্তব্য থেকে দূরত্ব রাখছে।’’ তার পরেই দলের বৈদেশিক শাখার দায়িত্ব ছেড়েছিলেন রাজীব গান্ধীর জমানায় ভারতের টেলিকম বিপ্লবের স্থপতি। কিন্তু দেড় মাসের মধ্যেই আবার স্বপদে পুনর্বহাল হলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, অতীতে ভারতীয় সংবিধান রচনায় জওহরলাল নেহরুর ভূমিকা এবং ১৯৮৪-র শিখবিরোধী দাঙ্গা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে স্যামের বিরুদ্ধে। গত জানুয়ারিতে মোদী অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনের আগে স্যাম বলেছিলেন, ‘‘ধর্মকে বড্ড বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এখন। গণতন্ত্র পিছনে চলে যাচ্ছে। এই যে সবাই ভাবছে দেশের যা কিছু ভাল সব প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব, এই ব্যাপারটা চিন্তার। বেশ ইঙ্গিত পাচ্ছি যে, আমরা ভুল রাস্তায় এগোচ্ছি। গোটা জাতি যখন রামমন্দির, রাম জন্মভূমি, দিয়া জ্বালাও বলে মেতে ওঠে, তখন সেটা বোঝা যায়।’’ তাঁর ওই মন্তব্যকে অস্ত্র করে সে সময়ও কংগ্রেসকে নিশানা করেছিল বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement