ভাইচুং ভুটিয়া। — ফাইল চিত্র।
উনিশটি বার ম্যাট্রিকে ঘায়েল হয়ে থেমেছিলেন সুকুমার রায়ের ‘সৎপাত্র’ কবিতার গঙ্গারাম। এক দশকে ভোটে হারের ‘ডাবল হ্যাটট্রিক’ করে অবশেষে রাজনীতিকে বিদায় জানালেন ভাইচুং ভুটিয়া। ভারতীয় ফুটবল টিমের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন মঙ্গলবার তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেছেন, ‘‘২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের পর আমি উপলব্ধি করেছি যে, ভোটের রাজনীতি আমার জন্য নয়। তাই আমি অবিলম্বে সব ধরনের নির্বাচনী রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি।’’
লোকসভার সঙ্গেই এ বার বিধানসভা ভোট হয়েছিল সিকিমে। সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিংয়ের দল ‘সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’ (এসডিএফ)-এর প্রার্থী ভাইচুং সিকিমের বারফাং বিধানসভা আসন থেকে ভোটে হেরেছেন। ওই কেন্দ্রে আট হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাং ওরফে পিএস গোলের দল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা (এসকেএম) প্রার্থী রিকশল দোরজি ভুটিয়া। গোলে এবং রিকশলকে ভোটে জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভাইচুং।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রথম বার তৃণমূলের টিকিটে দার্জিলিং কেন্দ্রে লড়ে হেরেছিলেন ভাইচুং। এর পর ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি আসনেও জোড়াফুল চিহ্নে ভোটে দাঁড়িয়ে পরাস্ত হন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ওই বছরের এপ্রিলে নতুন দল ‘হামরো সিকিম পার্টি’ গড়ার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে সিকিমের ২৩ আসনে লড়ে একটিতেও জিততে পারেনি ভাইচুংয়ের দল। প্রাক্তন জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক গ্যাংটক এবং তুমেন-লিঞ্জি কেন্দ্রে লড়ে দু’টিতেই হেরেছিলেন।
এর পর ওই বছর গ্যাংটক বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও হারেন তিনি। চলতি বিধানসভা ভোটে প্রথমে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল ভাইচুংয়ের। কিন্তু ২০২৩ সালে নিজের হাতে গড়া হামরো সিকিম পার্টিকে এসডিএফ-এ মিশিয়ে দেন তিনি। সভাপতি চামলিং এসডিএফের সহ-সভাপতি নিয়োগ করেন ভাইচুংকে। গত ১৯ এপ্রিল ৩২ বিধানসভা আসনবিশিষ্ট সিকিমে ভোট হয়েছিল এক দফায়। সেই সঙ্গে সে রাজ্যের একমাত্র লোকসভা আসনেও ভোট হয়েছিল। গণনা হয়েছিল গত ৪ মে। বিধানসভা ভোটে হেরে টানা ছ’টি নির্বাচনী পরাজয়ের নজির গড়েছেন ভাইচুং।