বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় জমানায় বিদেশমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে মঙ্গলবার থেকেই কাজ শুরু করলেন এস জয়শঙ্কর। ভারতের দুই পড়শি দেশ চিন এবং পাকিস্তান নিয়ে প্রথম দিনই ইতিবাচক মন্তব্য শোনা গেল তাঁর মুখে। পাশাপাশি তিনি এটাও মনে করিয়ে দেন, মোদীর নেতৃত্বে বিশ্বে ভারত কতটা এগিয়েছে। মোদী জমানাতেই বিদেশনীতি এক অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে বলেও দাবি করেন জয়শঙ্কর।
রবিবার মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন জয়শঙ্কর। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তিনি। সোমবার বিকেলে নিজের বাসভবনে নতুন মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তার পরই মন্ত্রক বণ্টন করা হয়। দেখা যায়, গত বারের মতোই এ বারও জয়শঙ্করকে বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্ব পাওয়ার পরের দিনই দফতরে আসেন জয়শঙ্কর। দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তার পরই সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁর ভাবনা তুলে ধরেন বিদেশমন্ত্রী। পাকিস্তান, চিনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতির পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে একটি স্থায়ী সদস্যপদ নিয়েও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান জয়শঙ্কর।
মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি সম্পূর্ণরূপে আশাবাদী, আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে বিদেশনীতি আরও সফল হবে। বিশ্বে ভারতের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি শুধুমাত্র আমাদের উপলব্ধি নয়, অন্য দেশগুলিও মনে করে ভারত সত্যি তাদের বন্ধু। তারা দেখেছে, জি২০ সম্মেলনে ভারত কী ভাবে সভাপতিত্ব করেছে। আমাদের দায়িত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।’’ শীঘ্রই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাবে ভারত, এই আশাও প্রকাশ করেছেন জয়শঙ্কর।
এর পরই ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধ প্রসঙ্গেও কথা বলেন জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও গণতান্ত্রিক দেশে পর পর তিন বার নির্বাচিত হওয়া খুবই বড় ব্যাপার। ভারতে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে, তা বিশ্ববাসী বুঝতে পারছেন।” জয়শঙ্কর আরও বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তান নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তবে দু’দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আলাদা এবং সমস্যাও ভিন্ন। চিনের বিষয়ে অবশ্যই আমরা সীমান্ত সমস্যা সমাধানের দিকে মনোযোগ দেব।’’
পাকিস্তান নিয়ে বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর মনে করিয়ে দেন আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের কথা। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বহু বছরের পুরনো আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমস্যা রয়েছে। তাই সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। আমাদের লক্ষ্য সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা।’’ দীর্ঘ দিন ধরেই ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে শীতলতা রয়েছে। চলতি বছরে দুই দেশে নতুন সরকার এলেও সেই শীতলতা কাটেনি। তবে আগামী দিনে বরফ গলার আশা করছেন জয়শঙ্কর।