অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র ।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে বলে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করেছেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ! প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তেমনটাই অভিযোগ তুলে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-র দ্বারস্থ হল তৃণমূল। সেবি-র চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচকে চিঠি পাঠিয়ে পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বঙ্গের শাসকদল। এর আগে গত ৫ জুনও সেবিকে চিঠি পাঠিয়েছিল তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলের দাবি ছিল, ভুয়ো বুথফেরত সমীক্ষার মাধ্যমে কারসাজি করে শেয়ার বাজারের সূচককে তোলা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে তদন্ত প্রয়োজন। মঙ্গলবার আবার নতুন অভিযোগ তুলে সেবির দ্বারস্থ হল তৃণমূল। দলের তরফে এই অভিযোগটিও করেছেন সাকেত।
তাঁর অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে মানুষকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে বলেছিলেন মোদী-শাহ। তাঁদের এই মন্তব্যের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কোনও কারচুপি হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি, ৩ জুন এবং ৪ জুন শেয়ার বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার কারণে মোদী, শাহ বা বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনও সংস্থা মুনাফা লাভ করেছে কি না, তারও তদন্ত প্রয়োজন৷
উল্লেখ্য, মোদী বলেছিলেন, ৪ জুনের পরে শেয়ার বাজার এত দৌড়বে যে, হাঁপ ধরে যাবে। শাহও সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ৪ জুনের আগে শেয়ার কিনে রাখার। তাঁর বক্তব্য ছিল, ৪ জুনের পর বাজার চড়বে। বাস্তবে বুথফেরত সমীক্ষাও মোদী সরকারের বিপুল আসনে জিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়ার পরে নজিরবিহীন উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিল সূচক। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় ফল বেরোনোর দিন ৪০০০ পয়েন্টের বেশি পড়ে যায় সেনসেক্স। লগ্নিকারীদের ৩১ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান হয়।
এর পরেই ৫ জুন সেবির দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। ভুয়ো বুথফেরত সমীক্ষার মাধ্যমে কারসাজি করে সূচককে তোলা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে পূর্ণ তদন্তের দাবি তুলে সেবি-র চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সাকেত। তৃণমূল সাংসদের যুক্তি ছিল, লোকসভার শেষ দফার ভোটগ্রহণের পরেই বুথফেরত সমীক্ষা বিজেপি তথা এনডিএ-র বিপুল আসনে জয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল। ফলে এর পরে পরেই গত ৩ জুন সেনসেক্স ২৫০০ পয়েন্ট ওঠে। অনেক লগ্নিকারী বিপুল মুনাফা করেছিলেন। কিন্তু ৪ জুন অর্থাৎ, ভোটের ফলের দিন সূচকটি ৪৩৮৯ পয়েন্ট পড়ে যায়। ৩১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয় লগ্নিকারীদের। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বুথফেরত সমীক্ষায় জড়িত একটি সংস্থাকে বিজেপি নিজস্ব সমীক্ষা চালানোর জন্য ভাড়া করেছিল। সেই সংস্থা আবার সংবাদমাধ্যমের জন্যও সমীক্ষা করেছে। ওই সংস্থা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিজেপির জয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল কি না এবং কোন কোন সংস্থা বাজারের ওঠানামা থেকে মুনাফা কুড়িয়েছে, তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছিল তৃ়ণমূল। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
প্রসঙ্গত, শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীর ৩০ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হওয়া নিয়ে এর আগে মোদী-শাহ জুটিকে নিশানা করেছিল কংগ্রেসও।