—ফাইল চিত্র।
নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক যখন ক্রমশ অধোগতির মুখে, তখন নতুন বিতর্ক তৈরি করল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের করা মন্তব্য। সম্প্রতি বণিকসভার একটি সম্মেলনে তিনি গৌতম বুদ্ধকে (এবং মোহনদাস কর্মচন্দ্র গাঁধীকে) ‘শ্রেষ্ঠ ভারতীয়’ হিসাবে উল্লেখ করার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাঠমান্ডু। নেপালের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামলাতে বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যের ব্যাখ্যা করে নয়াদিল্লির তরফে বোঝানো হয় যে, বিদেশমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছিলেন, বুদ্ধের ঐতিহ্য দু’দেশই ভাগ করে নিয়েছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে সার্বিক বিরোধে প্রলেপ দিতে ইতিমধ্যে নেপাল সেনার হাতে কোভিড মোকাবিলার জন্য ১০টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর তুলে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
এই ঘটনায় শুধু ক্ষমতাসীন কে পি ওলির কমিউনিস্ট পার্টিই নয়, নেপাল কংগ্রেস-ও ক্ষুব্ধ বলেই জানা গিয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাত চলাকালীন নেপালের সঙ্গেও সংঘাতের রাস্তা খুলে গিয়েছে। মোদী সরকারের বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতীয় ভূখণ্ডের তিন এলাকা নেপাল মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে তা সংসদে পাশ করিয়ে নিয়েছে। এর পরেও নেপাল সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করেই কথা বলে গিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল যে এই মুহূর্তে নেপাল নিয়ে রণং দেহি মনোভাব নেওয়া হবে না। এমন পরিস্থিতিতে কী ভাবে, বিদেশমন্ত্রী এমন উক্তি করলেন তা নিয়ে চলছে পর্যালোচনা।
নেপালের বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ঐতিহাসিক এবং পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই তথ্য সুপ্রতিষ্ঠিত যে গৌতম বুদ্ধ লুম্বিনীতে জন্মেছিলেন। নেপালের লুম্বিনী তাঁর জন্মস্থান। বৌদ্ধধর্মের উৎপত্তিও এখান থেকেই। এই ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্থলও বটে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ২০১৪ সালে বলেছিলেন, নেপাল হল শান্তির দেশ। কারণ, এখানে বুদ্ধ জন্মেছিলেন।’ নেপালের এই বিবৃতির পর নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়, “বিদেশমন্ত্রীর ওই মন্তব্য, আমাদের দু’দেশের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া বৌদ্ধ ঐতিহ্যের প্রসঙ্গে বলা। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে গৌতম বুদ্ধ লুম্বিনীতেই জন্মেছিলেন।’’