নিটে আবার পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভে পড়ুয়ারা। —ফাইল চিত্র।
বাড়তি নম্বর বাতিল হওয়ার পর ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ১৫৬৩ জন পড়ুয়াকে আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিয়েছিল জাতীয় টেস্টিং এজেন্সি এনটিএ। সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হল। শুক্রবার ওই পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করেছে এনটিএ। তাদের ওয়েবসাইটে গেলে ফল দেখা যাবে। রবিবারই চূড়ান্ত উত্তরপত্র (আনসার কি) প্রকাশ করা হয়েছে।
নিট-ইউজি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ৪ মে। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলও ওই দিনই প্রকাশিত হয়। কিন্তু নিটের ফল নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। দেখা যায়, একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম হয়েছেন। পেয়েছেন ৭২০-র মধ্যে ৭২০। অর্থাৎ, এক নম্বরও কাটা যায়নি তাঁদের। নিটের ইতিহাসে যা বিরল। এর আগে সর্বোচ্চ চার জনকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হতে দেখা গিয়েছিল নিটে। শুধু তা-ই নয়, নিটের ফলে আরও একাধিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। দেখা যায়, যে ৬৭ জন সম্পূর্ণ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল? কেউ কেউ কি আগে থেকেই প্রশ্ন হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন?
দেখা গিয়েছিল, নিটে অনেকে এমন কিছু নম্বর পেয়েছেন, যা সাধারণ হিসাবে পাওয়া সম্ভব নয়। এই প্রশ্নের উত্তরে এনটিএ জানিয়েছিল, পরীক্ষাকেন্দ্রে সময় কম পাওয়ায় কয়েক জনকে বাড়তি কিছু নম্বর দেওয়া হয়েছিল। পরে এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সেখানে জানানো হয়, বাড়তি নম্বর বাতিল করে দেওয়া হবে। এর ফলে ১৫৬৩ জনের নম্বর কমবে। তাঁরা চাইলে আবার পরীক্ষা দিতে পারেন। তবে দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দেওয়া ঐচ্ছিক।
নির্ধারিত দিনে দেখা যায়, দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দিতে বসেছেন ৮১৩ জন। যা মোট পরীক্ষার্থীর অর্ধেকের কিছু বেশি। অর্থাৎ, বহু পড়ুয়া সুযোগ পেলেও আর পরীক্ষায় বসেননি। যে ছ’টি শহরে এই বাড়তি নম্বর পেয়েছিলেন পরীক্ষার্থীরা, দ্বিতীয় বারের পরীক্ষা সেখানেও নেওয়া হয়। তবে এ বার পরীক্ষাকেন্দ্র গিয়েছিল বদলে। সেই পরীক্ষার ফল রবিবার প্রকাশ করা হয়েছে।
নিটের প্রশ্নফাঁস বিতর্কের মাঝেই এনটিএ আয়োজিত পর পর কয়েকটি পরীক্ষা পিছিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণার প্রবেশিকা নেটও পরীক্ষার এক দিন পর বাতিল ঘোষণা করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্বীকার করে নেন, এনটিএ-র প্রক্রিয়ায় গলদ রয়েছে। নেটের প্রশ্ন যে ডার্কওয়েবে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল, তা-ও জানিয়ে দেন তিনি। এনটিএ-র শোধনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। নিট এবং নেটের প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ধরপাকড় শুরু হয় বিভিন্ন রাজ্যে। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার আগের দিন প্রশ্ন বিক্রি হয়েছে। অনেক পড়ুয়াই তা কিনেছেন। এর মাঝে নিট বাতিলের দাবিও তোলেন পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশ। যদিও সুপ্রিম কোর্ট নিট বাতিলে সম্মতি দেয়নি।