বিজেপি নেতা জ্ঞানদেবী আহুজা।
সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে রাজস্থানের বিজেপি নেতা জ্ঞানদেবী আহুজাকে গ্রেফতার করল সে রাজ্যের পুলিশ। সম্প্রতি আহুজার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আমরা এর আগে পাঁচ জনকে মেরেছি। এই প্রথম ওরা আমাদের এক জনকে মারতে পারল।” আনন্দবাজার অনলাইন অবশ্য এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
কিন্তু এই ‘আমরা’ কারা? আর ‘ওরা’ই বা কারা? ভিডিয়ো থেকেই তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আহুজা বর্ণিত ‘ওরা’ আসলে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন। আর ‘আমরা’ হল তথাকথিত গোরক্ষক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। গোহত্যাকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে খুন হওয়া পহেলু খান এবং রাকবর খানের প্রসঙ্গও ওই ভিডিয়োয় উঠে এসেছে। আহুজা এক জায়গায় বলছেন, বেহরোর হোক বা লালওয়ান্ডি, আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে মেরেছি। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল ৫৫ বছরের পহেলু খানকে রাজস্থানের আলওয়ার জেলার বেহরোরে প্রায় ২০০ জনের একটি দল গোহত্যাকারী সন্দেহে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনার দু’দিন পর পহেলুর মৃত্যু হয়। একই ভাবে ২০১৮ সালের ২১ জুলাই হরিয়ানায় ২৯ বছর বয়সি রাকবর খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
ভিডিয়োর একটি অংশে আহুজাকে বলতে শোনা যায়, “আমি আমার লোকেদের খুন করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিচ্ছি। তারা ধরা পড়লেও আমরা তাদের ঠিক জামিনে মুক্ত করে নিয়ে আসব।”
পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর অবশ্য আহুজা দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তিনি জানিয়েছেন, আলওয়ারে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। সেখানেই তাঁরা তাঁকে জানান, রাজস্থানের মেওয়াত অঞ্চলে মুসলিমরা সাইনি বলে এক জন হিন্দুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আগে যে পাঁচ জন মুসলমান গণপিটুনিতে মারা গিয়েছেন, তারা গরু পাচার এবং হত্যার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছেন আহুজা।
মুসলিমরা অসংখ্য সন্তান উৎপাদন করে ভারতকে দখল করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন আহুজা। রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসারা ভিডিয়োটি ট্যুইট করে প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি যে কতটা সাম্প্রদায়িক দল, সেটা বুঝতে আর কোনও তথ্যপ্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে কি?