রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
দুই যুবকের সংসদে হাঙ্গামা বাধানোর কারণ যে বেকারত্ব, তা আরও এক বার তুলে ধরলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আজ সকালে যন্তর মন্তরে সাসপেন্ড হওয়া বিরোধী সাংসদদের নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিবাদসভায় এই প্রসঙ্গ তুলেছেন রাহুল।
বক্তৃতার শুরুতেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিছু দিন আগে সংসদে লোকসভা চলাকালীন দু’জন যুবক লাফিয়ে পড়েন। তার পরে একটু ধোঁয়া ছড়ায়। বিজেপি সাংসদরা সব পালাতে থাকেন! এটা অন্য কথা যে, ওঁরা নিজেরা দেশভক্ত বলে থাকেন!” সম্মিলিত হাস্যরোলের মধ্যে সহাস্যে রাহুল বলেন, “হাওয়া নিকল গ্যয়ে উনকে! আপনারা দেখতে পাননি, আমরা পিছন থেকে দেখছিলাম।”
দেশজোড়া বেকারত্ব প্রসঙ্গে একটি সমীক্ষার কথা আজ বিশদে বলেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “দেশে আসলে ভয়ঙ্কর বেকারত্ব চলছে। দেশের যুবকদের রোজগার নেই। আমি এক জনকে বলেছিলাম একটা সমীক্ষা করতে। কোনও ছোট শহরে গিয়ে যুবাদের সঙ্গে কথা বলে দেখতে, দিনে তাঁরা কত ক্ষণ মোবাইলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করেন। শুনে রীতিমতো বিপন্ন বোধ করছি যে তাঁরা দিনে গড়ে সাড়ে সাত ঘণ্টা ফোনের স্ক্রিন দেখছেন। মোদীর সরকার দেশের যুবাশক্তিকে মোবাইল ফোনে আসক্ত করে তুলেছে। কারণ, এই সরকার তাঁদের রোজগারের সুযোগ দেয়নি। বরং রোজগার
কেড়ে নিয়েছে।”
সংসদ-কাণ্ডের সূত্র ধরে দু’ভাবে আজ ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চ থেকে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। বলেছেন, “প্রথমটি হল, নিরাপত্তা কী ভাবে বিঘ্নিত হল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তার জবাব দিক। কারণ, যদি কেউ স্প্রে মেশিন নিয়ে ঢুকে যেতে পারে, সে না জানি আরও কী নিয়ে ঢুকতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকারের জন্যই যুবকেরা হতাশ হচ্ছেন।”
সম্প্রতি সংসদে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বাচনভঙ্গি নকল করছিলেন। রাহুল সেই ঘটনাটির ভিডিয়ো করার পর তাঁকে ঘিরেও বিতর্ক হয়। আজ রাহুল বলেন, “দেশজোড়া বেকারত্বের বিষয়টি কিন্তু সংবাদমাধ্যমে আসছে না। আর আমি সংসদের বাইরে এক জন সাংসদের ভিডিয়ো করেছি, তাই নিয়ে চর্চা চলছে। দেড়শো জন সাংসদকে এই সরকার বাইরে বার করে দিয়েছে, অথচ সেই প্রশ্ন ওঠে না কেন? প্রতিটি সাংসদ লাখ লাখ ভোট নিয়ে সংসদে আসেন। কেন্দ্র দেশের ৬০ শতাংশ মানুষের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে।”
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘ঘৃণার রাজনীতি’র মোকাবিলায় ‘মহব্বৎ কি দুকান’-এর কথা বলেছিলেন রাহুল। আজ তিনি বলেন, “বিরোধী সব দলের নেতাকর্মীরা আজ একজোট হয়েছেন। আমরা একসঙ্গে লড়াই করব। সেই লড়াই ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালবাসার লড়াই। মোদী সরকার, বিজেপি যত ধমকাবে, ভয় দেখাবে, ‘ইন্ডিয়া’ ততই সৌভ্রাতৃত্ব, ঐক্য, ভালবাসা এবং সম্মানের বার্তা প্রচার করবে।”