নয়ডার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র সব ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
স্যাঁতসেঁতে দেওয়াল, জঞ্জালে ভরা মেঝে, মরচে পড়া যন্ত্রপাতি। সেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছিল শিশুদের সর্দি-কাশির সিরাপ তৈরির কাজ! উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল তদন্তকারী দল।
বিধি মেনে ওষুধ তৈরির ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই রাখা হয়নি ওই কারখানায়। এমনকি, উৎপাদিত ওষুধের ব্যাচ নম্বর আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা হত না। প্রোপিলিন গ্লাইকল-সহ ওষুধ তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল কোন কোন সংস্থা থেকে কতটা পরিমাণে কেনা হয়েছিল, সেই তথ্য ভাল ভাবে সংরক্ষণ করা হত না।
সম্প্রতি ম্যারিয়ন বায়োটেকের সর্দি-কাশির সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে ১৮ জন শিশুর মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই গত ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কনট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার নয়ডার কারখানায় তল্লাশি অভিযান চালায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই সংস্থার নয়ডা ইউনিটে সব ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।সেই অভিযানের রিপোর্টে ‘ম্যারিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডে’র নয়ডার কারখানার মোট ৩০টি ত্রুটি ও গাফিলতি চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে অবশ্য আগেই নয়ডার ওই কারখানার লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) চলতি সপ্তাহেই ম্যারিয়ন বায়োটেকের অ্যাম্ব্রোনল সিরাপ এবং ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ দু’টিকে নিম্নমানের বলে ঘোষণা করেছে। ক্লিনিকাল পরীক্ষায় জানা গিয়েছে এই দু’টি কাশির সিরাপে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও গ্লাইকলের মাত্রা অত্যধিক বেশি। হু সতর্ক করে বলেছে, ‘‘এই দু’টি সিরাপই ভারত থেকে অন্য দেশে পাঠানো হয়। সেই তালিকায় উজবেকিস্তান ছাড়াও আরও দেশ রয়েছে। তাদের সতর্ক হতে হবে।’’