Badlapur Accused Death

‘বদলা পুরা’! বদলাপুরকাণ্ডে অভিযুক্তের মৃত্যুর দু’দিন পরে ফড়ণবীসের ছবি-সহ পোস্টার ঘিরে ছড়াল বিতর্ক

সোমবার সন্ধ্যায় বদলাপুরকাণ্ডে অভিযুক্তের মৃত্যু হয় পুলিশের গুলিতে। তার পর থেকেই উঠে আসতে শুরু করেছে ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’-এর তত্ত্ব। এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ পোস্টার ছড়াল মুম্বই শহরে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪০
Share:

মুম্বই ও শহরতলিতে ছড়িয়ে পড়া ‘বদলা পুরা’ পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।

বদলাপুর-কাণ্ডের অভিযুক্তের মৃত্যু কী ভাবে, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। তর্কবিতর্ক চলছে। বম্বে হাই কোর্টেও কড়া প্রশ্নের মুখে পড়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এরই মধ্যে বিতর্ককে আরও উস্কে দিল কিছু পোস্টার। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের ছবি-সহ বেশ কিছু পোস্টার ছড়িয়েছে মুম্বই ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায়। সেখানে ফড়ণবীসের হাতে উঁচিয়ে ধরা রয়েছে বন্দুক। পোস্টারে আরও একটি ছবি রয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রীর। সেটি স্বল্প আবছায়াময়। দ্বিতীয় ছবিটিতে আবার ফড়ণবীসের হাতে ধরা রয়েছে রাইফেল গোছের একটি আগ্নেয়াস্ত্র। সঙ্গে লেখা ‘বদলা পুরা’। অর্থাৎ, বদলা নেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। যদিও পোস্টারে ফড়ণবীসের বন্দুকধারী ওই ছবি দু’টির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

তবে ওই পোস্টারগুলি কারা ছড়িয়েছে, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। পোস্টারে কোনও সংগঠনের নামোল্লেখ নেই। উল্লেখ্য, অভিযুক্তের মৃত্যুর পর থেকেই ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’-এর একটি তত্ত্ব উঠে আসতে শুরু করেছিল। সেই আবহে বদলাপুরকাণ্ডে অভিযুক্তের মৃত্যুর ঠিক দু’দিন পরেই বন্দুক উঁচিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ এমন পোস্টার ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমে দৃশ্যত সক্রিয় ফড়ণবীসও প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। যদিও বুধবার সকাল থেকে নিজের সমাজমাধ্যমে হ্যান্ডলে অন্য একাধিক পোস্ট করেছেন উপমুখ্যমন্ত্রী।

সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল বদলাপুরের স্কুলে দুই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্তের। বধূনির্যাতনের একটি পৃথক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সে দিন অভিযুক্তকে হেফাজতে নিতে তালোজা জেলে গিয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। সেখান থেকে ফেরার পথেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অভিযুক্তের। কী ভাবে মৃত্যু হল অভিযুক্তের, তা নিয়ে ঘটনার পর থেকেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। যদিও পুলিশের দাবি, জেল থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইনস্পেক্টরের পিস্তল ছিনিয়ে নেন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। সেই ঘটনায় তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালিয়েছিল।

Advertisement

কিন্তু পুলিশের এই যুক্তি মানতে রাজি নন বিরোধী দলের নেতারা। রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘হাতকড়া’ পরা অবস্থায় কী ভাবে গুলি চালাতে পারেন অভিযুক্ত? তাঁর কথায়, ‘‘অক্ষয়ের দু’টি হাতই যদি বাঁধা থাকে, তা হলে কী ভাবে তিনি গুলি চালালেন পুলিশকে লক্ষ্য করে?” পাশাপাশি যে স্কুলে ওই ঘটনাটি ঘটেছিল সেটি এক বিজেপি নেতার বলেও দাবি প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের উদ্দেশে ভুয়ো এনকাউন্টার করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চহ্বানও অভিযোগ তুলেছেন, ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে অভিযুক্তকে।

মুম্বই ও শহরতলিতে উপমুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ এই পোস্টার ঘিরে মহারাষ্ট্রের শাসকশিবির থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিরোধীরা তোলা ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’ তত্ত্বে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়েছে তারা। মহারাষ্ট্রে বিজেপির মুখপাত্র শাহজাদ পুনাওয়ালা মঙ্গলবার বলেছেন, “আত্মরক্ষার্থে পুলিশের চালানো গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বদলাপুর-কাণ্ডে অভিযুক্তের। বদলাপুর তথা মহারাষ্ট্র যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে, তখন বিরোধী শিবির ধর্ষকের মৃত্যুতে শোক পালন করছে। ওরা হল ধর্ষক বাঁচাও জোট।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement