নরেন্দ্র মোদী এবং সচিন পাইলট। ফাইল চিত্র।
লৌকিক দেবতা ভগবান দেব নারায়ণের ১১১১তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার রাজস্থানের ভিলওয়ারায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রের শাসকদলের তরফে অরাজনৈতিক বলে দাবি করা হলেও, এর নেপথ্যে থাকা রাজনীতিকে অস্বীকার করতে পারছেন না কেউই।
রাজস্থানের গুজ্জর সম্প্রদায় ভগবান দেব নারায়ণকে বিশেষ ভাবে স্মরণ করে থাকে। আবার এই সম্প্রদায়ই রাজ্যের প্রায় ৪০টি বিধানসভা আসনের ভাগ্যনিয়ন্তা। প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে রাজস্থানে বরাবরই গুজ্জরদের আলাদা গুরুত্ব আছে। দশ মাস পরেই কংগ্রেস শাসিত এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে গুজ্জরদের দেবতার জন্মদিনে মোদীর উপস্থিত থাকাকে বিজেপি ‘অরাজনৈতিক’ বললেও বিরোধী দলগুলি তা মানতে চাইছে না।
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বলছে, সে বার গুজ্জররা ঢেলে ভোট দিয়েছিল কংগ্রেসকে। মূলত তাঁদের সমর্থনে ভর করেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল হাত শিবির। ওই নির্বাচনে বিজেপির ৯ জন গুজ্জর প্রার্থীই পরাস্ত হয়েছিলেন। গুজ্জর নেতারা অবশ্য জানিয়েছিলেন, রাজ্যে গুজ্জর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁরা সচিন পাইলটকে চেয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী না করে অশোক গহলৌতকে সরকারের প্রধান করায় গুজ্জরদের আশাভঙ্গ হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। গুজ্জর নেতা বিজয় বৈঁসলা হুঁশিয়ারির সুরে বললেন, “বার বার গুজ্জররা হারবে না। আমরা আরও বেশি গুজ্জর বিধায়ক চাই। ৪০টি আসনে আমাদের প্রভাব রয়েছে। দেখতে থাকুন কী কী হয়।” কিছু দিন আগেই গুজ্জর নেতারা সংরক্ষণের দাবিতে সরব হন। তাঁদের দাবি মানা না হলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে গুজ্জর ভোটকে নিজেদের অনুকূলে আনতে চাইছে বিজেপি। যদিও প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে রাজস্থান বিজেপির সভাপতি সতীশ পুনিয়া জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, উজ্জয়িনী মন্দিরের সংস্কার করেছেন। একই ভাবে তিনি দেব নারায়ণের মন্দির সংস্কারেও উদ্যোগী হবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সব কিছুকে ‘রাজনৈতিক চশমা’ পরে দেখা উচিত নয়। রাজ্যে গুজ্জরদের প্রায় ৯ থেকে ১২ শতাংশ ভোট আছে। অন্য দিকে পাইলট-গহলৌত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেও জেরবার দল। এই পরিস্থিতিতে গুজ্জর ভোট সামলাতে পাইলটের হাতেই রাজস্থান কংগ্রেসের ভার তুলে দেওয়া হয় কি না, সে দিকেই নজর সকলের।