মার্চে তিন বাহিনীর প্রধান এবং সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। — ফাইল ছবি।
ভারতে ‘মিলিটারি থিয়েটার কম্যান্ড’ তৈরির পথে কতটা এগোনো গিয়েছে? আসন্ন মার্চে কর্নাটকের করওয়ার নৌঘাঁটিতে ‘কম্বাইন্ড কম্যান্ডার্স কনফারেন্স’ (সিসিসি)-এ তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অবগত করবেন সেনা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) অনিল চৌহান। মিলিটারি থিয়েটার কমান্ড নিয়ে চূড়ান্ত স্তরের আলোচনাও সারবেন মোদী। কোনও পরিস্থিতিতে ভারতীয় ভূখণ্ডের বিশেষ কোনও অঞ্চলের অখণ্ডতা রক্ষা করতে তিন বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারবেন এক জন কম্যান্ডার। সংক্ষেপে একেই বলা হয় মিলিটারি থিয়েটার কম্যান্ড। সেনা সর্বাধিনায়ক নিয়োগ করার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা গতি পেয়েছে। সেনাকে সংস্কার নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডিবি শেখতকরের রিপোর্টে থিয়েটার কম্যান্ড গঠন করা নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে চিন এবং আমেরিকার সেনাবাহিনীতে এমন ব্যবস্থা রয়েছে।
তিন বাহিনীর মিলিত থিয়েটার কম্যান্ড তৈরির বিষয়ে দেশের দ্বিতীয় সিডিএস জেনারেল চৌহান ইতিমধ্যেই তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা সেরে ফেলেছেন। এ বিষয়ে ইতিবাচক দিক বর্ণনার পাশাপাশি থিয়েটার কম্যান্ড নিয়ে আপত্তির বিষয় নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করবেন সিডিএস। মনে করা হচ্ছে, এ বছরই সেনাবাহিনীতে থিয়েটার কম্যান্ড তৈরির প্রাথমিক ঘোষণা হয়ে যাবে। ফলে আগামী মার্চে কর্নাটকের নৌঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনা সর্বাধিনায়ক এবং তিন বাহিনীর প্রধানদের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তা হল, সশস্ত্র ড্রোনের ঠিক কতটা প্রয়োজন ভারতীয় সেনার, তা নির্ধারণ করা। সম্প্রতি ভারতীয় নৌসেনা দু’টি ‘এমকিউ- ৯বি সি গার্ডয়ান’ ড্রোন লিজ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সেনা বুঝতে চাইছে ঠিক কতগুলো ড্রোন তাদের এই মুহূর্তে দরকার। তবে ঢালাও ড্রোন ব্যবহারের কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। প্রথমত, ড্রোনের দাম অত্যন্ত চড়া। পাশাপাশি, যে আকাশসীমায় বিপক্ষেরও দাপট আছে তেমন জায়গা অর্থাৎ পাকিস্তানের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখা এবং তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (টিএআর) বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ড্রোন ব্যবহার কঠিন। এই বিষয় নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সেরে নিতে পারেন সেনাপ্রধানরা। তবে মুখ্য আলোচ্যসূচিতে বেশির ভাগ জায়গা জুড়েই থাকতে চলেছে মিলিটারি থিয়েটার কম্যান্ড নিয়ে আলোচনা।
২০২০-এর জানুয়ারিতে জেনারেল বিপিন রাওয়াত দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই বাহিনীতে থিয়েটার কম্যান্ড গড়ে তোলার সলতে পাকানোর আনুষ্ঠানিক শুরু। গত তিন বছর ধরে তিন বাহিনীর প্রধানরা এ নিয়ে তাঁদের মতামত বিস্তারিত আকারে নথিভুক্ত করেছেন। তা নিয়ে বিশদ আলোচনাও হয়েছে সংশ্লিষ্ট স্তরে। এ বার সেই আলোচনাতেই সিলমোহর পড়ার পালা। আসন্ন মার্চে তিন বাহিনীর প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে সেনা সর্বাধিনায়কের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেই তার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।