প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত
মনে করা হয়েছিল, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে মতুয়া সমাজের মন পেতে তাঁর মুখে সিএএ সংক্রান্ত নতুন কোনও ঘোষণা শোনা যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে আয়োজিত মতুয়া মেলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে শোনা গেল রাজনৈতিক মতভেদের কারণে নির্যাতনের প্রতিরোধে আওয়াজ তোলার আবেদন। রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে কাউকে আক্রমণ এবং হুমকি দেওয়ার ঘটনা ‘সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থী’ বলে জানিয়েছেন তিনি। মতুয়া সমাজের কাছে তাঁর বার্তা, ‘‘স্বার্থের জন্য আমরা খুন দেখেছি। এমন প্রবণতা রুখতে হবে।’’
মোদী অত্যাচার এবং অরাজকতা রুখতে সক্রিয় হওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন মতুয়া সমাজের কাছে। সরাসরি নাম না করলেও প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের নিশানা রামপুরহাটের বগটুই হত্যাকাণ্ডের দিকে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। হিংসা এবং অরাজকতা দূর করার পাশাপাশি দুর্নীতির মোকাবিলার কথাও মঙ্গলবার শোনা গিয়েছে মোদীর বক্তৃতায়। বক্তৃতায় সূচনায় মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ এবং মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর-সহ মতুয়া সমাজের প্রতিনিধিদের বাংলায় শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
মতুয়া সমাজের থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন বলেও বক্তৃতায় জানিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি, মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে মঙ্গলবার ঠাকুরনগরের বারুণীর মেলায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় গত বছর বাংলাদেশের ওড়াকান্দি সফরের কথাও বলেছেন তিনি। বর্তমানে ভারতীয় সমাজে বিভাজনের অপচেষ্টা চলছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সময়ে হরিচাঁদ ঠাকুরের দর্শনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি আমরা।’’ নারীশিক্ষা প্রচারে হরিচাঁদের ভূমিকার কথাও এসেছে তাঁর বক্তৃতায়। মোদী বলেছেন, ‘‘আজ আমরা যে লিঙ্গবৈষম্য দেখছি, উনবিংশ শতকে তা দূর করা জীবনের ব্রত করেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বাংলাদেশ সফরের কথা বলে প্রধানমন্ত্রী সুকৌশলে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসা মতুয়াদের ভাবাবেগ উসকে দিতে চেয়েছেন। প্রসঙ্গত, মোদী মঙ্গলবার সকালেই টুইটারে জানিয়েছিলেন, মতুয়া ধর্ম মহামেলায় ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করছেন। গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির কামনা সাগরে আজ, মঙ্গলবার পুণ্যস্নানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে মতুয়া ধর্ম মহামেলা। মোদী পূণ্যার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘ঠাকুরবাড়ি আমরা কাছে মহাতীর্থ।’’