প্রতীকী ছবি।
হোয়াটসঅ্যাপের এনক্রিপশন প্রযুক্তিতে রদবদল আনার পরেই অন্য মেসেজিং অ্যাপে ঝুঁকেছেন বহু মানুষ। তার আঁচ কি এ বার পাক জঙ্গি সংগঠনগুলিতেও? গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তদন্তে এমন তথ্য়ই উঠে এসেছে। গোয়েন্দাদের সূত্রে খবর, তুরস্কের একটি সংস্থার তৈরি একটি অ্যাপ-সহ মোট তিনটি অ্যাপে নিজেদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। অত্যন্ত দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশনেও কাজ করতে পারা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত মজবুত হওয়াতেই ওই অ্যাপেগুলির দিকে ঝুঁকেছে জঙ্গিরা।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ বা যে সব জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সেনা ও কেন্দ্রীয় অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। তাতেই এই ইঙ্গিত পেয়েছেন গোয়েন্দারা। আর তার পরেই নতুন ওই ৩টি অ্যাপ নিয়ে গবেষণা চালাতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। কী ভাবে সেগুলি ট্র্যাক করা যায়, তার উপায় খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার ঘোষণা করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। কিন্তু তাতে গ্রাহকদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বহু ইউজার হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে অন্য অ্যাপের দিকে ঝুঁকতে থাকেন। তার জেরে অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাতিল করে মার্ক জাকারবার্গের সংস্থা।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তিনটির মধ্যে জঙ্গিদের সবচেয়ে বেশি ঝোঁক তুরস্কের একটি অ্যাপের দিকে। ২০১৯-এর শেষে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছিল। তার পর উপত্যকায় এখন চালু রয়েছে শুধুমাত্র ২জি পরিষেবা। আর তুরস্কের এই অ্যাপটি দুর্বল ইন্টারনেট কানেকশনেও যথেষ্ট ভাল কাজ করে। এ ছাড়া এর এনক্রিপশন প্রযুক্তি এতটাই শক্তিশালী যে তা ‘ডিকোড’ করা কার্যত অসম্ভব। এ ছাড়া জঙ্গিরা ব্যবহার করছে আমেরিকার সংস্থার একটি এবং ইউরোপে তৈরি একটি অ্যাপ। এই তিনটি অ্যাপেরই সুরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত মজবুত। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে অ্যাপগুলির নাম প্রকাশ করতে চাইছেন না গোয়েন্দারা।
মূলত হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমেই নিজেদের জঙ্গি কার্যকলাপ এবং উপত্যকায় যুব সমাজের মগজ ধোলাই করে জঙ্গিরা। দলে নাম লেখানোর নেটওয়ার্ক তৈরিতে জঙ্গিরা মূলত হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করত। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একটা সময় তাঁদের নজরে আসে যে, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাক জঙ্গিদের কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বার্তা আদানপ্রদান প্রায় বন্ধ। তখন থেকেই গোয়েন্দারা আঁচ করেছিলেন। তার পর সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক এনকাউন্টার ও জঙ্গি আত্মসমর্পণের ঘটনায় তাঁরা এক প্রকার নিশ্চিত যে ওই তিনটি অ্যাপে নিজেদের পুরো নেটওয়ার্ক স্থানান্তরিত করেছে পাক জঙ্গিরা। এখন সেই অ্যাপগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর খুঁজে জঙ্গি কার্যকলাপের উপর নজরদারি রাখাই গোয়েন্দাদের কাছে চ্যালেঞ্জ গোয়েন্দাদের কাছে।