লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশের ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ফের বাড়ছে চিনা সেনার তৎপরতা। ফাইল চিত্র।
ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে রক্ষা করার জন্য যে যে পদক্ষেপ করা দরকার, করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে চিনের গ্রাম তৈরি সংক্রান্ত অভিযোগের উত্তরে মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “বেশ কিছু বছর যাবৎ চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নির্মাণকার্য চালিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে বেআইনি ভাবে অধিগ্রহণ করা ভূখণ্ডও রয়েছে। বেআইনি ভাবে ভূখণ্ড দখল করাকে ভারত কোনও দিন মেনে নেয়নি। চিনের অন্যায্য দাবিও আমরা মানছি না।”
লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশের ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ফের বাড়ছে চিনা সেনার তৎপরতা। বদলাচ্ছে সেনা বিন্যাসের ধরনও। আমেরিকার প্রতিরক্ষা এবং গোয়েন্দা বিভাগের বার্ষিক রিপোর্টে এমনই উল্লেখ রয়েছে। ওই রিপোর্টে চিনের পরমাণু অস্ত্রের দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ৭০০-র বেশি পরমাণু অস্ত্রের মালিক হবে চিন। ২০৩০-এ সেই সংখ্যা পৌঁছবে ১০০০-এ। পাশাপাশি বলা হয়েছে, অরুণাচল প্রদেশের উত্তর সুবনসিরি জেলায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে চিনা ফৌজ সেখানে আস্ত একটি গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে।
আজ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রিপোর্টটি আমরা দেখেছি। ভারত-চিন সীমান্ত এবং বিশেষ করে পূর্ব সেক্টরে চিনের পরিকাঠামো তৈরির বিষয়ে সেখানে উল্লেখ রয়েছে। এই বছরের গোড়াতেও প্রচারমাধ্যমে এই খবর দেখা গিয়েছিল।” তাঁর কথায়, “ভারত বরাবরই কূটনৈতিক ভাবে এই ধরনের কার্যকলাপের কড়া প্রতিবাদ করে আসছে। ভবিষ্যতেও এই প্রতিবাদ বহাল থাকবে। আমাদের সরকারও সীমান্তে পরিকাঠামোর কাজ বাড়াতে শুরু করেছে। তৈরি হচ্ছে সেতু, রাস্তা। অরুণাচল প্রদেশ-সহ সীমান্তবর্তী স্থানীয় মানুষের যোগাযোগের সুবিধা হচ্ছে তাতে। ভারতের নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন সমস্ত কার্যকলাপের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে অটুট রাখার জন্য যা যা পদক্ষেপ করা দরকার আমরা করছি।”
বিষয়টি নিয়ে আগেই সরব হয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, “লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে গত ১৮ মাসে আমরা চিনের আগ্রাসন দেখছি। চিন সীমান্তে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, ওই মেকি জাতীয়তাবাদ থেকে বেরিয়ে আসুন।” ভারতীয় যুব কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি বি ভি শ্রীনবাসও আজ টুইট করে বলেন, “আমাদের ভুখণ্ডে চিনের বেআইনি দখল ভারত মেনে নিচ্ছে না। তা হলে কি সার্জিকাল স্ট্রাইক অথবা লাল চোখ দেখিয়ে চিনাদের ঠেলে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে মোদীজির?”