বৃদ্ধার সঙ্গে প্রতারণা করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।
সমাজমাধ্যমে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে কয়েক লক্ষ টাকা খোয়ালেন এক বৃদ্ধা। গুজরাতের ভাসনা এলাকার বাসিন্দা ওই প্রবাসী ভারতীয়। অভিযোগ, স্কটল্যান্ডের এক ব্যক্তির সঙ্গে সমাজমাধ্যমে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সম্পর্কে জড়িয়েই তিনি প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। সাইবার ক্রাইমে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন ৬৩ বছরের ওই বৃদ্ধা।
স্বামীর মৃত্যুর পর হতাশায় ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আন্দ্রেস মার্টিনেজ নামে স্কটল্যান্ডের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ হয়। অল্পদিনের মধ্যেই তাঁদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। সেই সূত্রে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর আদানপ্রদান করেন।
বৃদ্ধার অভিযোগ, ওই ব্যক্তি নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। এ-ও জানিয়েছিলেন যে, তিনি খুব বিত্তবান। ওই ব্যক্তি তাঁকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন বলে দাবি করেছেন বৃদ্ধা। যদিও সেই প্রস্তাব ফেরান তিনি। পরিবর্তে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে থাকার কথা বলেন।
কয়েক দিন কথাবার্তার পর বৃদ্ধাকে ওই ব্যক্তি জানান যে , কোনও কারণে তাঁর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে গিয়েছে। তাঁর কাছে যা নগদ টাকা ছিল, তা লুট হয়ে গিয়েছে। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে ওই ব্যক্তিকে গত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে ১৯ লক্ষ টাকা দেন বৃদ্ধা। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই ব্যক্তি কিছু উপহার পাঠান বৃদ্ধাকে।
তাঁর অভিযোগ, উপহার পাওয়ার পরই এক মহিলা বার বার ফোন করতে থাকেন। তিনি নিজেকে মুম্বইয়ের শুল্ক আধিকারিক পরিচয় দিয়ে বৃদ্ধাকে জরিমানা দেওয়ার কথা বলেন। ওই উপহারের ছবিও পাঠানো হয় বৃদ্ধাকে। এর পর জরিমানা মেটাতে ১৫ লক্ষ টাকা দেন বৃদ্ধা। পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বৃদ্ধার কাছ থেকে টাকা চান বলে অভিযোগ। এর পরই বৃদ্ধা বুঝতে পারেন, তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। সেই সময় আন্দ্রেস নামে ওই স্কটিশ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বৃদ্ধা।
সম্প্রতি সাইবার ক্রাইম বিভাগে স্কটল্যান্ডের ওই ব্যক্তি ও অন্যদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ-সহ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধা। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বৃদ্ধার বাড়ি গুজরাতে হলেও তিনি আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়েছেন। বছরের ৮ মাস তিনি আমেরিকায় থাকেন। বাকি ৪ মাস ভারতে থাকেন। প্রতারণার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।