—ফাইল চিত্র।
বিয়েবাড়ি যাওয়ার জন্য সাজগোজ করেছিলেন তরুণী। বেরনোর আগে রান্নাঘরে ঢোকেন দুধ গরম করতে। নতুন বাড়ি। আলো আসেনি। তাঁর শ্বাশুড়িকে দেখা যায় একটি বাতি হাতে ওই বাড়িরই ভিতর যেতে। এর কিছু ক্ষণ পরেই জানা যায় তরুণীর শাড়িতে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মারাত্মক ভাবে জ্বলে যায় শরীর। বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
১৯৯৮ সালের ঘটনা। সোমবার এই ঘটনা সংক্রান্ত একটি মামলাতে রায় দিয়েছে কেরালা হাই কোর্ট। মামলাটিতে মৃত বধূর স্বামী এবং শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে তরুণীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। রুজু হয়েছিল পণের দাবির মামলাও। ৪৯৮এ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল মৃত বধূর স্বামী এবং শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে। আদালত জানিয়ে দিল, মহিলাদের সঙ্গে কোনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলেই ৪৯৮এ ধারা প্রয়োগ করা যায় না। তার জন্য প্রমাণ দরকার।
হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে শুনানি ছিল মামলাটির। আদালত বলে, হিংসার ঘটনা যে ঘটত, তার প্রমাণ পেশ করতে হবে আদালতে। কিন্তু এ খানে দেখা যাচ্ছে এই ঘটনার আগে অত্যাচার বা হিংসার কোনও অভিযোগই করা হয়নি অভিযোগকারীদের তরফে। যাঁর মৃত্যু হয়েছে তিনিও জীবদ্দশায় তাঁর স্বামী বা শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে পণের দাবি বা অত্যাচারের অভিযোগ আনেননি।
এই মামলায় অভিযুক্তের নাম শ্রীকুমার। মৃত তরুণীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। মৃতার পরিবারের দাবি বিয়ের পর থেকেই নতুন বাড়ি বানানোর জন্য তাঁদের মেয়ের কাছে টাকার দাবি করতেন তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। কথা না শুনলে চলত অত্যাচার, দুর্ব্যবহার। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন ওই তরুণী। এই অভিযোগে শ্রীকুমার এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তাঁরা। নিম্ন আদালতে শ্রীকুমার এবং তাঁর মাকে ৪৯৮এ ধারায় দোষী সাব্যস্তও করে। কিন্তু সেই নির্দেশ আপাতত সরিয়ে রাখল কেরল হাই কোর্ট।