অট্টালিকা ধ্বংসের আগে আশপাশের বহুতল ঢাকা হয়েছে। ছবি পিটিআই।
সকাল থেকেই তাঁর চোখেমুখে খানিকটা চিন্তার ছাপ। সব ঠিকঠাক হবে তো! ‘পরীক্ষা’র আগে শেষ মুহূর্তে এ প্রশ্নই তাড়া করছে তাঁর মনে। রবিবার সকাল থেকে তাই ‘রীতিমতো গায়ে কাঁটা দিচ্ছে’ নয়ডার যমজ অট্টালিকা গুঁড়িয়ে ফেলার দায়িত্বে থাকা সংস্থার প্রধান উৎকর্ষ মেটার।
বেআইনি নির্মাণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ভেঙে ফেলা হবে নয়ডার যমজ অট্টালিকা। কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু এই বহুতল ভাঙা ঘিরে সরগরম গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে বহুতল ধ্বংসের দায়িত্বে থাকা সংস্থার প্রধান (প্রজেক্ট হেড) বললেন, ‘‘যদি বলি আমি উৎকণ্ঠিত নই, তা হলে মিথ্যা কথা বলা হবে। আমি উৎকণ্ঠায় রয়েছি। সকাল থেকেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী।’’
বহুতল ধ্বংসের আগে সব রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৭টা থেকে অট্টালিকা সংলগ্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির উদ্যোগে সরানো হয়েছে এলাকার পথকুকুরদেরও। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা প্রস্তুত। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মেটা আরও জানিয়েছেন, বহুতল ধ্বংসের সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে থাকবেন মাত্র ছ’জন। এই ছ’জনের মধ্যে এক পুলিশকর্মী, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বহুতল ধ্বংসের কাজে আসা তিন বিশেষজ্ঞ ও দুই ‘ব্লাস্টার’ (বহুতল ভাঙার জন্য বিস্ফোরণ ঘটাতে বিশেষজ্ঞ)। মাত্র ন’সেকেন্ডেই গুঁড়িয়ে ফেলা হবে বহুতল।
অট্টালিকার ৪৫০ মিটারের মধ্যে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে পুলিশের তরফে। রাখা হচ্ছে দমকলের ইঞ্জিন, অ্যাম্বুল্যান্স। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, অট্টালিকা চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। থাকছেন পাঁচশোরও বেশি পুলিশকর্মী।
নয়ডার ওই যমজ বহুতল বেআইনি ভাবে নির্মিত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। দু’টি টাওয়ারের মধ্যে দূরত্ব ১৬ মিটার থাকার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই দূরত্ব রয়েছে মাত্র ন’মিটার। শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রবিবার ভেঙে ফেলা হবে এই অট্টালিকা।