প্রতীকী ছবি।
নীতি আয়োগ অর্থ মন্ত্রককে পরামর্শ দিয়েছে, এখন রাজকোষ ঘাটতির কথা না ভেবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পরিকাঠামোয় খরচ বাড়ানো হোক। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রকগুলিকে খরচ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যগুলিকে পরিকাঠামোয় সাহায্য করতে আগাম অর্থ মঞ্জুর করেছেন।
কিন্তু ওই পর্যন্তই! কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে মোদী সরকার পরিকাঠামোয় খরচে বরাদ্দ অর্থের অর্ধেকও খরচ করতে পারেনি। কর বাবদ মোদী সরকারের রাজস্ব আয় যথেষ্টই হচ্ছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে রাজকোষ ঘাটতিও বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৪৬ শতাংশে বাঁধা রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন কোভিডের গ্রাস থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে পরিকাঠামোয় হাত খুলে খরচ করতে পারছে না কেন্দ্র, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা প্রশ্ন তুলছেন।
বাজেটের আর এক মাসও বাকি নেই। অর্থমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ বারের বাজেটেও সরকারের মূল নজর থাকবে পরিকাঠামোয় খরচের দিকে। শিল্পমহলও দাবি জানিয়েছে, বাজেটে পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ার নীতি বজায় থাকুক। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, এপ্রিল থেকে নভেম্বর, অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে পরিকাঠামোয় খরচের লক্ষ্যমাত্রা ৫.৫৪ লক্ষ কোটি টাকার অর্ধেকও খরচ হয়নি। শুধু নভেম্বরেই আগের বছরের নভেম্বরের তুলনায় পরিকাঠামোয় অর্ধেক অর্থ ব্যয় হয়েছে।
কেন? অর্থ মন্ত্রক কি খরচে রাশ টানছে? অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রেল, বিদ্যুৎ, আবাসন ও নগরোন্নয়ন, যোগাযোগের মতো পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত কোনও মন্ত্রকই পরিকাঠামোয় যথেষ্ট খরচ করতে পারেনি। নভেম্বর পর্যন্ত গোটা বছরের পরিকাঠামোয় খরচের লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪৯.৩৮ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। অর্থমন্ত্রী সব মন্ত্রককেই খরচের গতি বাড়াতে বলেছেন সরকারের একটি সূত্র বলছে, জিএসটি, আয়কর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ভালই। ইতিমধ্যেই গোটা বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ ঘরে চলে এসেছে। কিন্তু বিলগ্নিকরণ থেকে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার লক্ষ্য পূরণ হবে কি না সন্দেহ। তা ছাড়া অর্থ বছরের শেষ কয়েক মাসে কর বাবদ আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্য ছিল, চলতি বছরে রাজকোষ ঘাটতিকে ৬.৮ শতাংশে নামিয়ে আনবেন। ২০২৫-২৬-এর মধ্যে ঘাটতিকে ধাপে ধাপে ৪.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথাও তিনি গত বাজেটে বলেছিলেন। কিন্তু চলতি বছরে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। সেই কারণে বুঝেশুনে খরচ করছে সরকার।