জ়াকিরকে দেশে ফেরাতে তৎপর বিদেশ মন্ত্রক। — ফাইল ছবি।
বিতর্কিত ইসলামি ধর্মগুরু জ়াকির নায়েককে ভারতে ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে এমনই দাবি করলেন মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী। তিনি জানিয়েছেন, জ়াকিরকে দেখে ফিরিয়ে আইনের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়েছে। বর্তমানে ওমানে রয়েছেন এই বিতর্কিত নেতা।
অরিন্দম বলেন, ‘‘জ়াকির নায়েকের বিরুদ্ধে ভারতে বহু মামলা রয়েছে। তিনি আইনের হাত এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ওমানের সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছি।’’
অরিন্দমের এই মন্তব্যের ঠিক একদিন আগে জ়াকির ওমানে পৌঁছন। সেখানে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথির মর্যাদা পাচ্ছেন। ওমানে একটি বক্তৃতাও দেওয়ার কথা জ়াকিরের। সেই বক্তৃতার বিষয়, ‘বিশ্বের প্রয়োজন পবিত্র কোরান’। অরিন্দমকে প্রশ্ন করা হয়, ওমানের সঙ্গে কি ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে? তার জবাবে অরিন্দম জানান, ওমানের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে কি না তা এই মুহূর্তে তাঁর জানা নেই। এ বিষয়ে খোজখবর করবেন বলেও জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। পাশাপাশিই তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে পুরো নিশ্চিত নই। আমাকে একবার খোঁজ নিতে হবে। ভারতের সঙ্গে কোন কোন দেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে তার তালিকা প্রকাশ্যেই আছে। আমার যত দূর মনে পড়ছে, ওমান সেই তালিকায় নেই।’’
১৯৯০ নাগাদ প্রথম পাদপ্রদীপের তলায় আসেন জ়াকির। ২০০০ সাল নাগাদ তাঁর মুম্বইস্থিত ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ (আইআরএফ) এর মাধ্যমে তাঁর ভাষণ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ভক্তের সংখ্যা বাড়ে লক্ষণীয় ভাবে। ধর্মীয় বিভিন্ন বক্তৃতায় অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠতে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৬-য় জ়াকিরের সংগঠন আইআরএফকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। জ়াকিরের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। ইতিমধ্যেই দেশ ছাড়েন তিনি। ২০১৭ থেকেই মালয়েশিয়ায় রয়েছেন তিনি। আর্থিক তছরুপের মামলায় ভারত তাঁকে পলাতক ঘোষণা করে।
এর পর মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন জ়াকির। কিন্তু ২০২০-তে জাতীয় সুরক্ষা ও নিরপত্তার কারণে জ়াকিরের বক্তৃতা নিষিদ্ধ করে মালয়েশিয়াও। ২০১৬-এর জুলাইয়ে জ়াকিরের পাসপোর্ট বাতিল ঘোষণা করে ভারত। সেই সময় জ়াকির দাবি করেছিলেন, তিনি অনাবাসী ভারতীয়।