বাঁ দিকে উপরে, পূজার মা মনোরমা খেড়কর। নীচে, পূজার বাবা দিলীপ খেড়কর। ডান দিকে, শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়কর। —ফাইল চিত্র।
বিতর্কিত শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়করের মাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে একটি পুরনো ভিডিয়োর সূত্রে। যেখানে এক কৃষককে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দিতে দেখা যাচ্ছে পূজার মা মনোরমা খেড়করকে।
মনোরমার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ওই কৃষক। তার পর থেকেই মনোরমা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে পুণে পুলিশ। অবশেষে বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় মনোরমাকে। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন আরও একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
যে ভিডিয়োর ভিত্তিতে মনোরমার বিরুদ্ধে মামলা, সেটি ২০২৩ সালের। দু’মিনিটের সেই ভিডিয়োয় মনোরমাকে দেখা যাচ্ছে পিস্তল উঁচিয়ে এক কৃষকের সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলতে। মনোরমার পাশে দাঁড়িয়ে একজন ‘বাউন্সার’। মনোরমা ওই কৃষকের সঙ্গে তর্কাতর্কি করছেন কোনও একটি জমির মালিকানা নিয়ে। ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে পুলিশ সেটির সত্যতা যাচাই করে জানতে পেরেছে, যে জমি নিয়ে তর্ক চলছিল, সেটি কিনেছিলেন পূজার বাবা এবং প্রাক্তন আমলা দিলীপ খেড়কর। মহারাষ্ট্রেরই মুলসি তহসিলে ২৫ একর জমি কিনেছিলেন দিলীপ। সেই জমিতে পূজার মায়ের ‘দিদিগিরি’র ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই মনোরমা এবং দিলীপের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাঁদের খুঁজে বার করার জন্য তিনটি পুলিশের দল তৈরি করা হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার পুলিশ গ্রেফতার করল মনোরমাকে।
সম্প্রতি পূজার মায়ের আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে মনোরমাকে উঁচু স্বরে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে মেট্রো রেলের আধিকারিক এবং পুলিশবাহিনীর সঙ্গে। অন্য একটি তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পূজার বাবা দিলীপের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল একাধিক বার। এমনকি, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছিল পুণের দুর্নীতি দমন ব্যুরো। পুলিশ জানতে পেরেছে, দিলীপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছিল আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলায়। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে আমলা পদ থেকে বরখাস্তও করা হয়েছিল দু’ বার। ২০১৮ এবং ২০২২ সালে। পুলিশের রেকর্ড থেকেই জানা যাচ্ছে ২০১৫-২০১৯ সালের মধ্যে অন্তত ৩০০ জন ব্যবসায়ী দিলীপের বিরুদ্ধে তাঁদের ব্যবসায় সমস্যা সৃষ্টি করা এবং তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন। ব্যবসাপিছু ২০ হাজার থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও দায়ের হয়েছিল দিলীপের বিরুদ্ধে।