টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবির পোস্টার। —ফাইল চিত্র।
বলিউডের ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আইপিএস মনোজ শর্মার স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় গণটোকাটুকি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল ক্লাসসুদ্ধ ছাত্র। ধরা পড়েছিলেন তাদের সাহায্যকারী শিক্ষকেরাও। ঠিক তেমনই রাজস্থানের একটি স্কুলেও গণটোকাটুকিতে ব্যস্ত ছাত্র এবং শিক্ষকদের হাতেনাতে ধরলেন রাজ্য শিক্ষা দফতরের পরিদর্শকেরা। তবে তার আগে চুপিসারে পাঁচিল টপকে স্কুলের ভিতরে ঢুকতে হল তাঁদের। ভিতরে গিয়েও টোকাটুকির পদ্ধতি দেখে চমকে গেলেন তাঁরা!
রাজস্থানের রাজ্য শিক্ষা দফতরের একটি দল পরীক্ষা চলাকালীন গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন স্কুলে অভিযান চালাচ্ছে । রাজস্থানের ওই বিশেষ স্কুলটিতে যে দলটি গিয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন শিক্ষা দফতরেরই আধিকারিক নিশা জৈন। তিনি বলেছেন, ‘‘স্কুলের সামনে পৌঁছে আমরা দেখতে পাই গেটে তালা ঝুলছে। অথচ ভিতরে পরীক্ষা চলছে। কেউ যাতে সতর্ক না হয়ে যান, তাই সন্তর্পণে পরিদর্শকেরা পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন।’’
সেখানেই অপেক্ষা করছিল চমক! ভিতরে গিয়ে পরিদর্শকেরা দেখেন, শিক্ষকেরা ব্ল্যাকবোর্ডে প্রশ্নের উত্তর লিখে দিচ্ছেন। আর তা দেখে টুকছে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা। একটি পরীক্ষার হলে দু’জন শিক্ষককে পরীক্ষার্থীদের হয়ে পরীক্ষা দিতেও দেখা যায়। নিশা জানিয়েছেন, আরও বিস্ময়কর ঘটনা হল, ওই পরীক্ষার্থীদের অনেকের কাছেই পাওয়া গিয়েছে হাজার দুয়েক করে টাকা। যা সম্ভবত শিক্ষকদের সাহায্যের বিনিময়মূল্য। এক পরীক্ষার্থী স্বীকারও করেছে শিক্ষকদের টাকা দেওয়ার কথা।
গোটা ঘটনাটির একটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। )রাজস্থানের শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল রাজেন্দ্র সিংহ চৌহান-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রন্থাগারিক-সহ তৃতীয় স্তরের ছ’জন শিক্ষককেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
‘টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবিতে ওই ঘটনার পরে স্থানীয় পুলিশ অফিসারের নির্দেশে দ্বাদশ শ্রেণির সমস্ত ছাত্রকেই ফেল করানো হয়েছিল। রাজস্থানের ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও কি একই শাস্তি হবে? উত্তর মেলেনি। তবে ‘টুয়েলভ্থ ফেল’ ছবিতে ভাবী আইপিএস মনোজ এই ঘটনার পর শিখেছিলেন জীবনের মূলমন্ত্র— ‘চিটিং নেহি করনা হ্যায়’। রাজস্থানের ওই স্কুলের ‘মনোজ’রা কি সেই শিক্ষা পাবে?