ছবি : এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডল।
পরনে শতচ্ছিন্ন মলিন ধুতি, শীর্ণকায় চেহারা। হাত দু’টি প্রার্থনার ভঙ্গিতে জুড়ে রেখেছেন বুকের সামনে। চোখে শুকিয়ে যাওয়া জল। ধুলোয় ভরা মেঝের উপর দিয়ে এ ভাবেই উল্টেপাল্টে গড়াচ্ছেন এক বৃদ্ধ। মুখে বলছেন, ‘‘এ বার কী করব আমি? কী করব আমি!’’
ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের মান্দাসওরের জেলাশাসকের দফতর। দৃশ্যটি ধরা পড়েছে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিয়োয় (ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আশপাশের সকলেই বৃদ্ধকে ওই অবস্থায় দেখছেন। কিন্তু কেউ বাধা দিচ্ছেন না বা তাঁকে ধুলোভরা মেঝে থেকে টেনে তুলছেনও না।
বৃদ্ধের নাম শঙ্করলাল। তিনি পেশায় কৃষক। মান্দাসওরেই এক খণ্ড জমি আছে তাঁর। শঙ্করলালের অভিযোগ, সেই জমি কেড়ে নিয়েছে জমি মাফিয়া। অথচ জেলাশাসকের দফতরে সেই অভিযোগ বার বার জানানো সত্ত্বেও লাভ হয়নি। তাঁর জমিটি ফেরানোর কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। বাধ্য হয়েই তাই জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তাঁর দফতরের মেঝেয় গড়িয়ে ‘দণ্ডি কাটার’ সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
শঙ্করলাল বলেছেন, ‘‘তহসিলদারেরা নানা রকম ভুল করেন। তার জন্য ভোগান্তি হয় আমাদের মতো দরিদ্র কৃষকদের। আধিকারিকেরা সব দুর্নীতিগ্রস্ত বলেই কৃষকদের প্রতারিত হতে হচ্ছে।’’ শঙ্করলালের ওই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, শঙ্করলাল যে জমিটির কথা বলছেন, সেই জমিটি তাঁর একার নয়। ওই জমিতে তাঁর পরিবারেরও অংশীদারিত্ব রয়েছে। জমিটির অর্ধেক অংশ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে বিক্রি করে দেন শঙ্করলালের পরিবারের কয়েক জন সদস্য। প্রাক্তন এক তহসিলদার সেই বিক্রিবাটার নথিপত্রে অনুমোদনও দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী এখনও জমিটি হাতে পাননি। জেলা প্রশাসন এই ব্যাখ্যা দিলেও শঙ্করলাল তহসিলদারের কোন ভুলের কথা বলছেন বা ‘জমি মাফিয়া’ বলতে কাদের বোঝাতে চাইছেন, সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।