সাংবাদিক বৈঠকে ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা। ছবি: পিটিআই।
শেষ নয় শুরু। লোকসভা ভোটে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-কে পর্যুদস্ত করার পরে প্রথম বার বৈঠকে বসে শনিবার এই বার্তা দিল শিবসেনা (ইউবিটি), এনসিপি (শরদ) এবং কংগ্রেসের ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’। তিন দলের নেতারা সমস্বরে জানিয়ে দিলেন, চলতি বছরে মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটেও জোট বেঁধেই লড়বেন তাঁরা।
শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেই এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ার এবং মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি নানা পাটোল ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ ছিলেন বৈঠকে। আলোচনার পরে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে উদ্ধব বললেন, ‘‘লোকসভা ভোটের এই জয় শেষ নয় শুরু। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে একযোগে লড়ে আমরা সরকার পরিবর্তন করব।’’ প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে পওয়ারের মন্তব্য, ‘‘আমরা নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি! রাজনৈতিক পরিবেশ মহাবিকাশ আঘাড়ীর অনুকূল করে তোলার জন্য।’’
লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, মহারাষ্ট্রে এ বার ১৮টি লোকসভা কেন্দ্রে এনডিএ প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেছিলেন মোদী। তার মধ্যে ১৫টিতেই এনডিএ-র প্রার্থীরা হেরেছেন। লোকসভা ভোটের প্রচারে দেশের বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানকার যে এলাকায় তিনি রোড-শো করেন, সেই মুম্বই উত্তর-পূর্বে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী! রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, সেই প্রসঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করেই মোদীকে ‘ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন পওয়ার।
চলতি বছরের অক্টোবরে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজের দাবি, সে রাজ্যে সরকার পরিবর্তন আসন্ন। ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’ ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ে বিজেপি, শিন্ডেসেনা এবং অজিত পওয়ারপন্থী এনসিপি জোট সরকারের পতন ঘটাবে বলে দাবি করেন তিনি। অন্য দিকে, উদ্ধব মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার সঙ্গে সন্ধির সম্ভাবনা খারিজ করে বলেছেন, ‘‘যাঁরা আমাদের ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের আর ফেরত নেওয়া হবে না।’’
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের ৪৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে এ বার বিরোধী জোট মহাবিকাশ আঘাড়ী তথা ইন্ডিয়া মঞ্চ পেয়েছে ৩০টি আসন। তার মধ্যে কংগ্রেস ১৩টি, উদ্ধবের শিবসেনা ন’টি এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি আটটিতে জিতেছে। অন্য দিকে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহাদ্যুতি জোট (বিজেপি, অজিত পওয়ারপন্থী এনসিপি, একনাথ শিন্ডেপন্থী শিবসেনা) জিতেছে ১৭টি আসনে। বিজেপি ন’টি, শিন্ডেসেনা সাতটি, অজিতপন্থী এনসিপি পেয়েছে মাত্র একটি আসন। সাংলি লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা বিশাল পাটিল। সে রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসন্তদাদা পাটিলের পৌত্র বিশাল জেতার পরেই সনিয়া গান্ধী এবং রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কংগ্রেসের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।